সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

প্রকাশিত: ১০:২৫ অপরাহ্ণ, জুন ২১, ২০২২

অনলাইন ডেস্ক : সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। দ্রুত পানি বাড়ায় জেলার শাহজাদপুর ও চৌহালীতে শুরু হয়েছে নদী ভাঙ্গণ। ধসে গেছে রাউতারা বাঁধ। নদীতে বিলীন হয়েছে ১৫টি বসতভিটা।

এছাড়া, এ অঞ্চলের এক হাজার হেক্টর গো-চারণ ভূমি ডুবে যাওয়ায় কৃষকরা তাদের গবাদি পশু বাড়ি অথবা উঁচু স্থানে স্থানান্তর করেছেন। ঘাসের জমি ডুবে যাওয়ায় গো-খাদ্যের সংকটে পড়েছেন খামারীরা। পানি প্রবেশ করায় পাট, তিল, কাউন, বাদাম, ভুট্টা, শাক-সবজি অন্যান্য ফসল ও নেপিয়ার ঘাসের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ইতোমধ্যে তালিয়ে গেছে এক হাজার ৭০০ হেক্টর জমির উঠতি ফসল।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার (পানি পরিমাপক) হাসানুর রহমান জানান, রোববার সন্ধ্যায় শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে বিপদসীমার ২১ সেন্টিমিটার এবং কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যমুনার পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

পানি বৃদ্ধির ফলে কাজিপুর, সদর, চৌহালী, উল্লাপাড়া, বেলকুচি ও শাহজাদপুর সহ জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ইতিমধ্যেই জেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে আরও কমপক্ষে তিন দিন। চৌহালী ও শাহজাদপুরে ভাঙ্গণরোধে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এদিকে, পানি বৃদ্ধির ফলে শনিবার রাতে শাহজাদপুরের রাউতারায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বালির বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। একইসঙ্গে উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের পাচিল ও চৌহালী উপজেলার বাগুটিয়া ইউনিয়নে নদী ভাঙ্গণ চলছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় এ দুটি এলাকার অন্তত ১৫টি বসতভিটাসহ বিস্তীর্ণ ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। ইতিমধ্যেই ভাঙ্গণ এলাকায় ৪০ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এছাড়া, ভাঙ্গণরোধে ৩০ হাজার জিও ব্যাগ প্রস্তত রাখা হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান জানান, বন্যার্তদের জন্য ইতিমধ্যেই ৯১১ মেট্রিক টন চাল, নগদ ২০ লাখ টাকা এবং চার হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় এগুলো বিতরণের জন্য স্ব-স্ব এলাকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের উপবরাদ্দ দিয়ে পাঠানো হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বাবলু কুমার সুত্রধর জানান, বন্যার কারণে ১১শ হেক্টর জমির পাট, ৩৪০ হেক্টর তিল ও ১০০ হেক্টর আউস ধানসহ মোট এক হাজার ৭০০ হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। পানি দ্রুত সরে না গেলে সব কিছু পঁচে নষ্ট হয়ে যাবে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে।