ধর্মপাশায় এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

প্রকাশিত: ৬:১৭ অপরাহ্ণ, মে ২৬, ২০২২

ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি ; সুনাগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের ধুবালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক দানিছুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৫ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটায় ওই ছাত্রীর মা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

গত মঙ্গলবার বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণিতে ৩ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। টিফিন পিরিয়ড চলাকালীন সময় দুই জন শিক্ষার্থী দুুপুরের খাবার খেতে বাড়িতে চলে যায়। ওই সময় ভুক্তভোগী ছাত্রী একাই শ্রেণিকক্ষে অবস্থান করছিল। কিন্তু ওই ছাত্রী যখন শ্রেণিকক্ষ থেকে বের হতে চাইলে ওই সময় শিক্ষক দানিছুর রহমান শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত হয়ে তাকে পড়ানোর অজুহাতে একটি বই চায়। ছাত্রী বই নিয়ে শিক্ষকের কাছে গেলে শিক্ষক ওই ছাত্রীর জামা ধরে টান দিয়ে তাকে কাছে নিয়ে শরীরের স্পর্শকাতর বিভিন্ন স্থানে হাত দেয়। এতে ছাত্রী বিব্রত হয়ে শ্রেণিকক্ষ থেকে চলে যেতে চাইলে শিক্ষক ছাত্রীর জামা ধরে টানতে থাকে।

ছাত্রী কৌশলে শিক্ষকের কাছ থেকে ছুটে বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি তার মাকে জানায়। পরে ছাত্রীর মা বিদ্যালয়ে এসে প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি অবগত করলে প্রধান শিক্ষক আবার বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে জানানোর জন্য বলেন। পরে ছাত্রীর মা বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে অবগত করলেও কোনো প্রতিকার পায়নি ভুক্তভোগীর পরিবার। স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে শিক্ষকের বিচারের দাবিতে স্থানীয় এলাকাবাসীকে নিয়ে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে।

এদিকে বুধবার সকালে অভিযুক্ত শিক্ষকের উপস্থিতিতে বিদ্যালয় খোলার সময় স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়েন অন্য শিক্ষকেরা। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ইকবাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া বিষয়টি সামাজিকভাবে শেষ করবেন বলে দায়িত্ব নেন।

অভিযুক্ত শিক্ষক দানিছুর রহমান চৌধুীর বলেন, ‘চারজন শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজন ক্লাসে ছিল। আর দুজন গোসল করতে চলে যায়। অভিযোগকারী ছাত্রীকে টান দিয়ে এনে থাপা (থাপ্পর ) দিয়ে বলেছি আমি তোদের মারি না শাসনও করি। পরে ছাত্রীকে অন্য শিক্ষার্থীদের আনতে বলি।’

প্রধান শিক্ষক মন্মথ চন্দ্র তালুকদার বলেন, ‘আমার শিক্ষক বলেছেন তিনি ছাত্রীকে শাসন করেছেন আর ছাত্রীর পরিবার বলছে ছাত্রীকে হেস্তন্যস্ত করা হয়েছে।’
ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ইকবাল বলেন, ‘ওই শিক্ষক ছাত্রীর শরীরে স্পর্শ করে থাকলে শিক্ষককে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হবে।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মানবেন্দ্র দাস বলেন, এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির হাসান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’