নেত্রকোনায় বাড়ির আঙিনায় বন্যার পানি, নৌকায় ধান শুকাচ্ছেন কৃষক

প্রকাশিত: ১২:৪৮ পূর্বাহ্ণ, মে ২৫, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার চত্রংপুর গ্রামের কৃষক শামীম আহম্মেদ। টানা বৃষ্টির কারণে কাটা ধান শুকাতে পারছিলেন না তিনি। প্রায় ১৫ দিন বৃষ্টির পর রোদ উঠলেও বাড়ির আঙিনা পর্যন্ত বন্যার পানি থাকায় পড়েন বিপাকে। তাই ইঞ্জিনচালিত নৌকার ওপর শুকাতে শুরু করেন ধান।

কৃষক শামীম আহম্মেদের ধান শুকানোর এ পদ্ধতি এরইমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে বেশ সাড়া ফেলেছে। এছাড়া অনেকে পাকা সড়ক কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উঁচু মাঠে ধান শুকাচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলাজুড়ে ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ২০ মে থেকে ২২ মে পর্যন্ত উব্দাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ২৩ মে সকাল থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় উব্দাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বৃষ্টি আর না হলে দুদিনের মধ্যেই পানি বিপৎসীমার নিচে চলে আসবে বলে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এদিকে গত দুই সপ্তাহ ধরে ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি হাওরে প্রবেশ করায় উপজেলাজুড়ে চরম দুর্ভোগ দেখা দেয়। বন্যার পানি ও শ্রমিক সংকটের কারণে উপজেলার প্রায় ২০ শতাংশ বোরো ধান কৃষকরা এখনো ঘরে তুলতে পারেননি।

সোমবার সকাল থেকে পানি কমতে থাকায় ধান ঘরে তোলা শুরু করেন। শ্রমিকদের সঙ্গে স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ পরিবারের লোকজনকে ধান কাটতে দেখা গেছে। এদিকে বেশ কয়েক দিন পর রোদ উঠলেও বাড়ির আঙিনা ও আশপাশের জায়গায় পানি উঠে পড়ায় কৃষকরা ধান শুকাতে হিমশিম খাচ্ছেন। আবার জায়গার অভাবে অনেকে বেছে নিয়েছেন দূর-দূরান্তের পাকা সড়ক, খোলা জায়গা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উঁচু মাঠ।

কৃষক শামীম আহম্মেদ বলেন, ‘এ বছর আট একর জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি। এর মধ্যে পাঁচ একর জমির ধান কেটেছি। বাকি ধান পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে যায়। সোমবার সকাল থেকে পানি কমতে থাকায় শ্রমিকরা কোনো রকমে ওই ধান কাটতে শুরু করেছে। তবে বেশিরভাগ ধান পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বেশ কয়েক দিন ধরে রোদ না থাকায় কাটা ধান ঘরে থাকতে থাকতে অঙ্কুর (চারা) গজিয়েছে। সোমবার রোদ উঠলেও বাড়ির আঙিনায় কোমর সমান পানি। তাই দুটি নৌকার ছাদে অল্প অল্প করে ধান শুকাচ্ছি।’

সময় সংবাদ /ডি এন