নতুন ভোটারের তথ্য সংগ্রহ শুরু ২০ মে

প্রকাশিত: ১:০১ অপরাহ্ণ, মে ৯, ২০২২

অনলাইন ডেস্ক : এবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারযোগ্য নাগরিকদের তথ্য নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম, সংগ্রহ করা হবে তাদের তথ্য। কার্যক্রম শুরু হবে ২০ মে থেকে। পরিচালিত হবে তিন সপ্তাহ ধরে।

ইসি থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ২০ মে থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নির্দিষ্ট বয়সসীমার নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। ০৯ জুন পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহের পর ছবি, বায়োমেট্রিক ও চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবি সংগ্রহের কাজ করা হবে। এর জন্য কেন্দ্র ঠিক করা হবে।

এবার ২০০৭ সালের ০১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম, তাদের তথ্য সংগ্রহের এ কাজ চলবে। ০৯ জুন পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহের পর অন্যান্য কার্যক্রম কোন কোন এলাকায় গড়াবে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত। যদিও দেশের অধিকাংশ এলাকায় এ কাজ আগেই শেষ হয়ে যাবে।

ইসির সহকারী সচিব মোশারফ হোসেন স্বাক্ষরিত পরিপত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

সর্বশেষ গত ০২ মার্চ ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০ জন ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ কোটি ৭৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৯ জন পুরুষ, পাঁচ কোটি ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৭ জন নারী এবং ৪৫৪ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন।

ইসি সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০০৭-০৮ সালের ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর ২০০৯, ২০১২, ২০১৪, ২০১৫, ২০১৭ এবং সর্বশেষ ২০১৯-২০২০ সালে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। সেবার একইসঙ্গে তিন বছরের তথ্য, অর্থাৎ যাদের বয়স ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পূর্বে ১৮ বছর হয়েছে এমন নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়।

জন্মনিবন্ধনের সঙ্গে মিল রেখে ফরম পূরণ
যেসব নাগরিকরা নতুন করে ভোটার তালিকায় যুক্ত হবেন, তারা অবশ্যই ফরম-২ শিক্ষাগত সনদ, জন্মনিবন্ধনের সঙ্গে মিল রেখে পূরণ তা করবেন। তাহলে সঠিক ও নির্ভুল এনআইডি পাওয়া সম্ভব হবে। এর আগে, নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি-২০২২ সুষ্ঠু ও সুচারুরূপে সম্পন্নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় করণীয়র বিষয়ে পরিপত্র জারি করেছে।

ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি-২০২২ এ যাদের জন্ম ২০০৫ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে এবং বিগত ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে যারা বাদ পড়েছেন, তাঁরা নিবন্ধন করতে পারবেন। তথ্য সংগ্রহকারীরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করবেন।

যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন হবে
নিবন্ধনের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পূরণ করা ফরম-২ এর সঙ্গে অনলাইন জন্ম সনদ অথবা এসএসসি বা সমমান পরীক্ষা পাশের সনদের ফটোকপি জমা দিতে হবে। এছাড়া অন্যান্য কাগজপত্র যেমন- নাগরিক সনদ, প্রত্যয়নপত্র/বাড়ি ভাড়া/হোল্ডিং ট্যাক্স/যেকোনো ইউটিলিটি বিল পরিশোধের রসিদের কপি জমা দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে।

নিবন্ধন কেন্দ্রেও ভোটাররা উপস্থিত হয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদর্শনপূর্বক ভোটার হিসেবে নিবন্ধন করতে পারবেন। ভোটার নিবন্ধন ফরম-২ এর সঙ্গে জন্ম সনদ বা অন্যান্য কাগজাদি সংযুক্ত করে গেঁথে রাখতে হবে।

ভোটার তালিকা আইন ২০০৯ এর ধারা ৩ (ক) এ নামে সংজ্ঞায় শিক্ষা সনদগুলোর পাশাপাশি জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, ২০০৪ এর অধীন নিবন্ধিত নামকে নিবন্ধনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ ভোটার হতে পারবেন
সরকার বাংলদেশের তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীকে ‘হিজড়া লিঙ্গ’ হিসেবে চিহ্নিত করে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রেক্ষাপটে ভোটার তালিকায় নতুন অন্তর্ভুক্তি করতে পারবেন। তবে হিজড়া জনগোষ্ঠীকে ভোটার হিসেবে নিবন্ধনের ক্ষেত্রে তাদের শনাক্তকরণের জন্য সমাজসেবা অফিসের প্রত্যয়ন অথবা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির প্রত্যয়নের ভিত্তিতে নিবন্ধন করতে হবে। এ বিষয়ে যথাযথ দৃষ্টি রাখাতে হবে যে তারা যেন ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে কোন ভাবেই বঞ্চিত না হন। ফলে, সব নিয়ম মেনে তৃতীয় লিঙ্গের লোকজনও ভোটার হতে পারবেন।

ভোটার তালিকা থেকে মৃত ভোটারের নাম কর্তন
ভোটার তালিকাভুক্ত ভোটারদের মধ্যে যারা ইতোমধ্যে মারা গেছেন অথচ ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছেন, তাদের নাম ভোটার তালিকা বিধিমালা, ২০১২-এর ২৬(৬) মোতাবেক কর্তনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তথ্য সংগ্রহকারীরা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত মৃত ভোটারের নাম কর্তনের জন্য ফরম-১২ পূরণপূর্বক সংগ্রহ করবেন।

ফরম-১২ এর সঙ্গে অবশ্যই মৃত্যু সনদ বা ডাক্তারের সনদ বা চেয়ারম্যান/মেয়র/কাউন্সিলের প্রত্যয়নপত্র সংযুক্ত করে রাখতে হবে। এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে- এ জন্য ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশনের জন্ম ও মৃত্যু রেজিস্ট্রার থেকে মৃত ভোটার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা যেতে পারে। তবে মৃত ভোটারের তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে জীবিত ভোটারের নাম লিপিবদ্ধ না হয়, সে বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

ভোটার এলাকা স্থানান্তর
এক ভোটার এলাকা থেকে অন্য ভোটার এলাকায় স্থানান্তরের লক্ষ্যে ফরম-১৩ (স্থানান্তর) পূরণপূর্বক প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদিসহ সরাসরি স্থানান্তরিত এলাকার থানা/উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়ার পর যথাযথ যাচাই-বাছাই ও তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ভোটারের ভোটার এলাকা স্থানান্তর করা যেতে পারে। এছাড়া, তথ্য সংগ্রহকারী বাড়ি বাড়ি গিয়েও ভোটার স্থানান্তরের তথ্য সংগ্রহ করে তা সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রেশন অফিসারের কার্যালয়ে পাঠাবেন।

নিবন্ধন কার্যক্রম
নিবন্ধন কেন্দ্রে ভোটারের তথ্য সঠিক ভাবে এন্ট্রির ক্ষেত্রে ডাটা এন্ট্রির পর তার তথ্যাদি মুদ্রণ করে আবেদনকারীর স্বাক্ষর গ্রহণ এবং স্বাক্ষরিত প্রিন্ট কপিটি নিবন্ধন ফরম ও অন্যান্য ডকুমেন্টসহ স্ক্যান করে সংশ্লিষ্ট ভোটারের ডাটার সঙ্গে সংযুক্ত করে রাখতে হবে। এছাড়া, সংশ্লিষ্ট ভোটারের আইরিশ এবং ১০ আঙুলের ছাপের বায়োমেট্রিক গ্রহণ করতে হবে।