সুন্দরবনের বাঘ লোকালয়ে, আতঙ্কে চার গ্রামবাসী

প্রকাশিত: ৬:৫০ অপরাহ্ণ, মে ৬, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার খেজুরবাড়িয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে আবারো হানা দিয়েছে সুন্দরবনের একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার। ভোলা নদী ভরাট হওয়ার কারণে সুন্দরবন সংলগ্ন এই লোকালয়ে মাঝেমধ্যে বাঘ ঢুকে পড়ছে। লোকালয়ে বাঘ হানা দেয়ার ঘটনায় ৪টি গ্রামের মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্কের পাশাপাশি র্নিঘুম রাত কাটছে তাদের। এই অবস্থায় বনরক্ষীদের একটি দল গ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে বাঘ সুন্দরবনে ফিরিয়ে নিতে টহল টহল দেয়া শুরু করেছে।

শরণখোলার ধানসাগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর মো. আবুল হোসেন খান জানান, সুন্দরবন থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দুরত্বে তাদের বাড়ির সংলগ্ন মাছের ঘের। তার ছেলে মো. শাহিন খান বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাছের ঘের পাহারা দিতে যান। এসময় টর্চ লাইটের আলোতে একটি বাঘ ঘেরের মধ্যে বসে থাকতে দেখেন। সাথে সাথে ছেলের ডাক চিৎকারে তিনি এগিয়ে আসলে বাঘটি দৌড়ে পালিয়ে যায়। তবে বাঘটি বনে ফিরে গেছে বা লোকালয়ে লুকিয়ে রয়েছে তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। এরপর থেকে রাতভর বনরক্ষী ও গ্রামবাসী মিলে পাহারা দিয়েছেন।

সুন্দরবনের ধানসাগর ষ্টেশন কর্মকর্তা মো আব্দুস সবুর জানান, তারা লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ার খবর পেয়ে কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রুপ (সিপিজি), ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম (ভিটিআরটি) ও এলাকাবাসীদের নিয়ে ওই গ্রামসহ আশপাশের ৪টি গ্রামে পাহারা দেয়া হচ্ছে। বাঘটি লোকালয়ে পাওয়া গেলে নিরাপদে ফিরিয়ে দেয়া হবে। ভোলা নদী ভরাট হয়ে কারনে গ্রামের সাথে মিশে যাওয়ার কারনে প্রায়ই শরণখোলা উপজেলায় সুন্দরবন সংলগ্ন রাজাপুর, দাসেরভারানি, খেজুরবাড়িয়া, টগড়াবাড়ি এলাকার লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ছে। বৃহস্পতিবার রাতে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার লোকালয়ে আবুল হোসেন মেম্বরের মাছের ঘেরে বাঘ দেখতে পাওয়ার আগে ৩১ মাচ রাজাপুর গ্রামের সোবাহান হাওলাদার বাড়িতে ঢুকে একটি মহিষকে আক্রমন করে বাঘ। এভাবে লোকালয়ে বাঘ এসে প্রায়ই হানা হানা দিচ্ছে। এঘটনায় এই ৪টি গ্রামের মানুষের মধ্যে চরম বাঘ আতঙ্ক বিরাজ করছে। লোকালয়ে আসা বাঘ যাতে মানুষের হাতে মারা না পড়ে ও সুন্দরবনে ফিরিয়ে নেয়া যায় সেজন্য বনরক্ষী ও গ্রামবাসী মিলে পাহারা দেয়া হচ্ছে। বন বিভাগ সব সময় সতর্ক রয়েছেন।

লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ার বিষয়ে খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো বলেন, গত ২৮ মার্চ বন বিভাগের এক সভায় লোকালয়ে যাতে বাঘসহ বণ্যপ্রাণী প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের ৬০ কিলোমিটার লম্বা বেড়া দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন অর্থ ছাড় পাওয়া গেলে আগামী এক বছরের মধ্যে এ কাজ শুরু হবে। এছাড়া সুন্দরবন সুরক্ষ প্রকল্পের মাধ্যমে ভোলা নদী পুনঃখনন করা হবে বলেও তিনি জানান।