হলি আর্টিজানে হামলার পাঁচ বছর

প্রকাশিত: ৫:৪৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ১, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : গুলশানের হলি আর্টিজানে সেই ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলার ঘটনার পাঁচ বছর আজ। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাজধানীর গুলশান ২ নম্বরের ৭৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর প্লটের হলি আর্টিজান ও ওকিচেন রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনায় ৯ জন ইটালির নাগরিক, ৭ জাপানি নাগরিক, ১ ভারতীয় নাগরিক, ৩ বাংলাদেশি নাগরিকসহ ২২ জন নিহত হন।

হলি আর্টিজান বেকারিতে নারকীয় জঙ্গি হামলার পাঁচ বছর উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল ৭টা থেকে গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের পাঁচ নম্বর প্লটের ওই বাড়িটি নিহতদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য খুলে দেওয়া হবে। গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোফাজ্জল হোসেন জানান, করোনা মহামারির কারণে কঠোর লকডাউনের মধ্যেও সীমিত পরিসরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশেষ করে বিদেশি নাগরিকদের জন্য এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে সেখানে বেশি মানুষের ভিড় করতে দেওয়া হবে না।

হোলি আর্টিজানে হামলাপর পর সেনাবাহিনীর অপরাশেন থান্ডার বোল্ড অভিযানে ৫ জঙ্গি নিহত হয়। হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনার জের ধরে পরবর্তীতে সারাদেশে পুলিশ ও র‌্যাব ২৭ টি জঙ্গি বিরোধী অভিযান চালায়। এতে ৭৩ জন জঙ্গি (পুরুষ ও নারী) নিহত হয়। অভিযান চালাতে গিয়ে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লে.কর্নেল আবুল কালাম আজাদসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তা এবং চার জন উৎসুক জনতা নিহত হন।

ওই হামলায় তামিম ও সরোয়ার জাহান মানিকসহ ২১ জঙ্গির জড়িত থাকার প্রমাণ উল্লেখ করে ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করে মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট সংস্থা সিটিটিসি (কাউন্টার টেরোরিজম এ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম) ইউনিট। এই ২১ জনের মধ্যে ১৩ জন নিহত হয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে।

হামলার পর ব্যাপক আলোচনায় ছিল নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিম। কিন্তু চার্জশিটে তাকে আসামি করা হয়নি। চার্জশিটে বলা হয়, নব্য জেএমবির জঙ্গিরা ছয় মাস আগে থেকে ওই হামলার পরিকল্পনা করে প্রস্তুতি নেয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল, দেশকে ‘অস্থিতিশীল’ করা, বাংলাদেশকে একটি ‘জঙ্গি রাষ্ট্র’ বানানো।এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত জঙ্গিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

জঙ্গিদের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে র‌্যাবের ডিজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, জঙ্গীদের মাথা চাড়া দেয়ার কোন সুযোগ নেই। এরা বিভিন্ন সময়ে অপতৎপরতা চালানোর চেষ্টা করছে। এটাও আমাদের মনিটরিংয়ে ধরা পড়ে। মাঝে মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওদের বিচরণ ধরা পড়ে। সেটাও আমরা নজরদারির মধ্যে এনে গ্রেফতার করছি। ওই হামলার পর প্রায় ১ হাজার ৫০০ জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া বিপদগামী ১৫ জঙ্গি সদস্য আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে। ওদের বড় হামলার কোন সক্ষমতা নেই। জঙ্গি হামলার বিষয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকতে হবে।