কুমিল্লাকে দারুণ জয় এনে দিল সৌম্য সরকার

প্রকাশিত: ৮:৪৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৭, ২০২০

স্পোর্টস ডেস্ক : চলতি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে তার ব্যাটিংয়ের চেয়ে বোলিং নিয়েই আলোচনা হচ্ছিলো বেশি। মিডিয়াম পেস বোলার হিসেবে বেশ কার্যকরী ভূমিকাও রাখছেন কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের হয়ে। তাই বলে ব্যাটিংটা যে ভুলে যাননি- সেটি আজ (মঙ্গলবার) সিলেট থান্ডারের বিপক্ষে প্রমাণ করে দিলেন কুমিল্লার তারকা ক্রিকেটার সৌম্য সরকার।

যথারীতি বল হাতে দারুণ পারফর্ম করে ২ ওভারে খরচ করেছিলেন মাত্র ৭ রান। তবে মূল কাজটা তিনি করেছেন ব্যাট হাতে। মাত্র ৩০ বলে ৫৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে কুমিল্লাকে এনে দিয়েছেন ৫ উইকেটের দারুণ এক জয়। অধিনায়ক ডেভিড মালান খেলেছেন ৪৯ বলে ৫৮ রানের কার্যকরী ইনিংস।

এ জয়ের ফলে ১০ ম্যাচে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে সুপার ফোরে খেলার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখলো কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স। অন্যদিকে নিজেদের সবকয়টি ম্যাচ খেলে মাত্র ১টি জয় নিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করলো সিলেট থান্ডার। যা কি না বিপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে পরিণতি।

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দুই দলের মুখোমুখি প্রথম ম্যাচটা ছিলো টাই। আগে ব্যাট করে ১৪০ রান করেছিল কুমিল্লা। পরে সিলেটের ইনিংসও থামে ১৪০ রানেই। সুপার ওভার জিতে পূর্ণ ২ পয়েন্ট পেয়েছিল সৌম্য-মুজিবদের কুমিল্লাই।

ঢাকায় ফিরে মুখোমুখি দ্বিতীয় ম্যাচে আগে ব্যাট করে সিলেট দাঁড় করিয়েছিল ১৪১ রানের সংগ্রহ। একসময় মনে হচ্ছিলো, এ রানেই জিতে যাবে তারা। কিন্তু ডেভিড মালানের দায়িত্বশীল ও সৌম্য সরকারের ঝড়ো ফিফটিতে শেষপর্যন্ত ৫ বল ও ৫ উইকেট হাতে রেখেই জিতেছে কুমিল্লা।

রান তাড়া করতে নেমে কুমিল্লার শুরুটা ছিলো একদম যাচ্ছে তাই। অফস্পিনার নাইম হাসানের ঘূর্ণিতে প্রথম ৬ ওভারে মাত্র ১৬ রান তুলতেই ২ উইকেট হারায় তারা। টানা ৪ ওভার বোলিং করে ২১ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন নাইম। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন এবাদত হোসেন ও সোহাগ গাজী।

যার ফলে ১২ ওভার শেষে কুমিল্লার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৫৫ রান। কোনো উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচ করেন গাজী। তবে ৩২ রানে ৩ উইকেট পতনের পর চতুর্থ উইকেটে রয়েসয়ে কার্যকরী এক জুটিই গড়েন মালান ও সৌম্য।

১৩তম ওভার থেকে হাত খুলে খেলা শুরু করেন দুজনেই। পার্টটাইমার জনসন চার্লসের সে ওভারে আসে ১১ রান। পরে দেলোয়ার হোসেনের করা ১৪তম ওভারে ৩ ছক্কা হাঁকিয়ে মোট ২১ রান নিয়ে নেন মালান ও সৌম্য। পরের দুই ওভারে আসে আরও ২১ রান।

যার ফলে ১২ ওভারে ৫৫ থেকে চোখের পলকেই ১৬ ওভারে ১০৮ রানে পৌঁছে যায় কুমিল্লা। তবে ১৬তম ওভারেই এবাদতকে সাজঘরে থার্ডম্যান দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন মালান। শেষ হয় তার ৪৯ বলে ৫৮ রানের ইনিংস। এটি তার টানা দ্বিতীয় ফিফটি। দেশে ফিরে যাওয়ার আগে শেষ ম্যাচে খেলেছিলেন ৭৪ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস।

অধিনায়ক সাজঘরে ফিরে গেলেও দায়িত্বপালনে ভুল করেননি সৌম্য। ডেভিড উইজকে (৮ বলে ১৩) সঙ্গে নিয়ে ম্যাচের বাকিটা শেষ করেন তিনি। শেষ ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি মেরে মাত্র ৩০ বলে নিজের ফিফটি পূরণের পাশাপাশি দলের জয়ও নিশ্চিত করেন এ ড্যাশিং ব্যাটসম্যান।

চলতি বিপিএলে এটি সৌম্যরও দ্বিতীয় ফিফটি। এর আগে রাজশাহী রয়্যালসের বিপক্ষে ম্যাচে ৮৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। তবে সে ম্যাচের মতো এবারের ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা হয়নি সৌম্যর। চাপের মুহূর্তে ৫৮ রানের অধিনায়কসুলভ ইনিংস খেলায় ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন মালান।

এর আগে কুমিল্লার বোলারদের তোপে এই ম্যাচেও হাত খুলে খেলতে পারেননি সিলেটের ব্যাটসম্যানরা। এক আবদুল মজিদ যা একটু চেষ্টা করেছেন। ওপেনিংয়ে নেমে ইনিংসের শেষ ওভারে এসে আউট হয়েছেন। তবে তার ৪০ বলে ৪৬ রানের ইনিংসটিকেও টি-টোয়েন্টিসুলভ বলার উপায় নেই।

বাকি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে জনসন চার্লস ১৫ বলে ২৬, জীবন মেন্ডিস ১১ বলে ২৩ আর অধিনায়ক আন্দ্রে ফ্লেচার ২৫ বলে করেন ২২ রান। আগের ম্যাচে ৩৮ বলে ৪৭ রানের ইনিংস খেলা মোহাম্মদ মিঠুন এ ম্যাচে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। ২৫ বলে তিনি করেন ১৮ রান।

কুমিল্লার বোলারদের মধ্যে ২টি করে উইকেট নেন আল আমিন হোসেন আর ডেভিড উইজ। মুজিব উর রহমান নেন ১ উইকেট। সৌম্য সরকার উইকেট না পেলেও ভালো বোলিং করেছেন, ২ ওভারে দেন মাত্র ৭ রান।