গাজীপুরে থেমে নেই অবৈধ ইটভাটা, হুশ নেই প্রশাসনের

প্রকাশিত: ১২:১৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৭, ২০২০

নিউজ ডেস্কঃ গাজীপুর এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত ইটভাটা বন্ধে অভিযান অব্যাহত রাখলেও থেমে নেই এলাকার প্রভাবশালীরা দেশের উচ্চ আদালতের রায় না মেনে পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই নিজ ক্ষমতায় চলছে অবৈধ ইট ভাটা। তারই স্বাক্ষর রেখে চলছে, গাজীপুর সিটি কর্পোরশনের নাওজোর ইসলামপুর এলাকায় ৫টি ইটভাটা।সিটি করপোরেশন এলাকায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই নিজ ক্ষমতা ব্যবহার করছেন এসকল ইটভাটার মালিক। অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে ওঠা জনবসতি এলাকার কাছাকাছি ইটভাটার অবস্থান। বিনষ্ট করছে ফসলী জমি। ইটভাটার কালো ধোঁয়া আর ইট/মাটি পরিবহনের জন্য রাস্তাসহ পরিবেশ আজ হুমকির মুখে।আর এ কারণে জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ, জনসাধারণ ক্ষতির সম্মুখিন হলেও নির্বিকার স্থানীয় প্রশাসন। গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি বাঘিয়া উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন বি,ও,বি বিক্সস নামে ও তার আশেপাশে আরো পাঁচটি ইটভাটা চালু করা হয়েছে, মহানগরীর কারখানা বাজার এলাকায় চালু করা হয়েছে দ্বিধাহীন ভাবে ১২ থেকে ১৫টির মত ইটভাটা।

ঢাকা-গাজীপুরসহ আশে-পাশের ৫টি জেলার সকল অবৈধ ইটভাটা ১৫ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলার নির্দেশ প্রদান করেন দেশের উচ্চ আদালত। কিন্তু উচ্চ আদালতের আদেশের মাস পুড়িয়ে গেলেও গাজীপুর মানা হচ্ছে না আদালতের নির্দেশনা। পরিবেশ অধিদপ্তরেরও বন্ধ করার মত নেই তেমন কোন সদিচ্ছা।উচ্চ আদালতের নির্দেশ মোতাবেক, চার জেলার মধ্যে অন্যতম গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ও জেলা। গাজীপুর পরিবেশ অধিদফতরের তালিকা অনুযায়ী ৩৫০টি ইটভাটার মধ্যে ২৬৯টি অবৈধ। সিটি কর্পোরেশন এলাকায় প্রায় ১৭০টি ভাটা থাকলেও একটিরও নেই বৈধ কাগজপত্র।এছাড়া শ্রীপুর উপজেলার ২২টি ভাটার মধ্যে মাত্র ৬টি বৈধ। বাকি ১৬টির নেই পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র। আর লাইসেন্স হালনাগাদ আছে মাত্র ২টির। শুধু সিটি কিংবা শ্রীপুর না, জেলার কালিয়াকৈরে ৩৮টির মধ্যে মাত্র ২০টি বৈধ, কাপাসিয়ায় ৩২টির মধ্যে ১০টি বৈধ, কালীগঞ্জে ২২টির মধ্যে ৫টি বৈধ, সদর উপজেলার ৬৬টির মধ্যে ৪০টি বৈধ।

অবৈধ এসব ভাটার নেই ট্রেড লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র কিংবা জেলা প্রশাসকের অনুমোদনপত্র। অবৈধ ইটভাটা গুলোতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে জরিমানা আদায় করলেও থেমে নেই ইট তৈরী।সরেজমিনে দেখে এবং ইটভাটা মালিক পক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায়, জরিমানাটা ছিলো সামনের দরজা বন্ধ রেখে পেছনের দরজা খোলা রাখার শামিল। গেল ৩০ ডিসেম্বর সকাল গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কড্ডা, বাইমাইল, বাঘিয়া এলাকায় ইটভাটা গুলোতে অভিযান পরিচালনা করে আর,বি,সি, ঢাকা ব্রিকস, মদিনা ব্রিকস ও ট্রিপল এইটসহ (৮৮৮) মা ব্রিক্সে ভ্রাম্যমাণ আদালত।অভিযানে মদিনা ও ঢাকা ব্রিকসকে ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। আর বাকিদের মালিকপক্ষ খুঁজে না পাওয়ায় ট্রিপল এইট বিশ্বের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করার আদেশ দেন পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজী তানজিরুল আহমেদ। একই এলাকায় সগৌরবে চলছিলো কিংবা এখনো চলছে বিওবি ব্রিক্সসহ আরও একাধিক ইটভাটা।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ইসলামপুর এলাকায় ইটভাটা চালু করার জাদুর কাঠি সম্পর্কে এম,বি,এম ইটভাটা মালিক পক্ষের কাছে জানতে চাইলে, তিনি পাঠিয়ে দেন বটতলা নামক স্থানে অন্য ইটভাটার কাছে। সেখানে ৫টি ভাটার দায়িত্বে আছেন মশিউর সাহেব। তিনি সব কিছু দেখাশুনা করেন।এ বিষয়ে মশিউর সাহেব জানান ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুস সালাম সাহেব জানিয়ে চালু করেছি, তো আপনারা সংবাদ প্রচার করুন, কোন সমস্যা নেই। কথাগুলো যেন বেমালুম ক্ষমতার চাঁদরে মোড়ানো।গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক আব্দুস সালাম সাহেব মুঠো ফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো চালু করেছে আমার জানা ছিলো না, আমি অচিরেই ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। আমাকে অবগত করার জন্য ধন্যবাদ।