মেয়ার্সের ডাবল সেঞ্চুরিতে লজ্জার হার বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ৫:৩৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২১

সময় সংবাদ ডেস্কঃযে মাঠে আগে কোনো দল ৩১৭ রানের বেশি তাড়া করে জিততে পারেনি, সেখানে ৩৯৪ পেরিয়ে বাংলাদেশকে হারিয়ে দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ দিনের শেষ সেশন পর্যন্ত ‘অদ্ভুত’ আচরণ করে যাওয়া উইকেটে এমন রেকর্ড সম্ভব হয়েছে সফরকারীদের অভিষিক্ত ব্যাটসম্যান কাইল মেয়ার্সের ধ্রুপদী অপরাজিত ডাবল সেঞ্চুরিতে।

অবিশ্বাস্য? তা বলাই যায়। রোমাঞ্চকর? সে তো বটেই! কিন্তু এ দুটি শব্দের কোনোকিছুই এখন শিহরিত করবে না বাংলাদেশ দলকে। বরং বলা ভালো, কাল জয়ের সুবাস পেতে পেতে আজ শেষ দিনে অবিশ্বাস্যভাবে টেস্টটা ৩ উইকেটে হেরে বসল বাংলাদেশ।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। এর আগে তারা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪৪৮ রান পাড়ি দিয়েছে।

মাত্র ছয়জন ক্রিকেটার অভিষেক টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। এর মধ্যে কাইল মেয়ার্স একমাত্র ক্রিকেটার, যিনি চতুর্থ ইনিংসে এই কীর্তি গড়লেন।

শেষের দিকে চট্টগ্রাম টেস্ট ম্যাচকে টি-২০ পরিনত করে জিম্বাবুয়ে। শেষ সেশনে ১০ ওভার আগের স্কোরবার্ড দেখে কে বলবে, এটা টেস্ট ম্যাচ! হ্যাঁ, পোশাকটা সাদা, বলটাও লাল কিন্তু স্কোরবোর্ড বলছে টেস্ট ম্যাচটা টি–টোয়েন্টি থেকে টি ১০–এ নামিয়ে এনেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

শেষ সেশনে খেলা প্রায় ২০ ওভার বাকি থাকতে জয়ের জন্য ৮২ রান দরকার ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। হাতে ছিল ৫ উইকেট। এক প্রান্তে আস্থার প্রতীক হয়ে ব্যাট করছিলেন সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া কাইল মায়ার্স। অন্য প্রান্তে প্রথম ইনিংসে ‘খুঁটি’ হয়ে থাকা জশুয়া দা সিলভা। এখান থেকে মারার বল পেলে ছাড়েননি মায়ার্স–সিলভা। নাঈম হাসানের করা পরের ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা মেরে অবিশ্বাস্য জয় তুলে নেওয়ার পথে দ্রুতলয়ে ব্যাট করা শুরু করেন মায়ার্স।

নাঈম ও মেহেদী হাসান মিরাজের করা পরের ওভারগুলো থেকে অন্তত একটি করে হলেও চার কিংবা ছক্কা তুলে নিয়েছেন মায়ার্স। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জয়ের জন্য বাকি প্রায় ১০ ওভারে ২৬ রান দরকার ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ২৮৮ বলে ১৯০ রানে অপরাজিত ছিলেন মায়ার্স। অন্য প্রান্তে ৪৯ বলে ১৪ রানে অপরাজিত জশুয়া।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে মেহেদী হাসান মিরাজের সেঞ্চুরি (১০৩) এবং সাদমান ইসলাম (৫৯), সাকিব আল হাসানের (৬৮) হাফসেঞ্চুরিতে ৪৩০ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গুটিয়ে যায় ২৫৯ রানে।

১৭১ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ থামে ২২৩ রানে। তাতে মোট লিড হয় ৩৯৪।

বিশাল রানের টার্গেটে খেলতে নেমে চতুর্থ দিন শেষ বিকেলে তিন উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ইনিংসে চার উইকেট নেয়া মিরাজ এই তিনটি উইকেট নেন।

অবাক করার বিষয় হলো তৃতীয় দিন যে উইকেটে ভয়ংকর সব টার্ন দেখা গেছে, পঞ্চম দিন তার কিছুই চোখে পড়েনি। নিজেদের অভিষেক টেস্টে খেলতে নামা কাইল মেয়ার্স এবং এনক্রুমা বোনার অনায়াস ব্যাটিংয়ে ২১৬ রানের জুটি গড়েন। এই সময়ে তারা ৪৪২টি বল খেলেছেন!

দিনের মধ্যভাগে কুইকারে এনক্রুমা বোনারকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন তাইজুল ইসলাম। তিনি অতিমানবীয় এক ইনিংস খেলে দলকে জয় এনে দেন।

বাংলাদেশ এদিন ক্যাচ ফেলেছে, রিভিউয়ের সুযোগ একাধিকবার নিতে ভুল করেছে। ফিল্ডিংটাও ভালো হয়নি।