খুলনায় অনুমতি ছাড়াই এলপি গ্যাসের জমজমাট ব্যবসা

প্রকাশিত: ৪:৪০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৬, ২০২০

আতিয়ার রহমান,খুলনা ; খুলনা নগরীর প্রায় প্রতিটি মোড়েই চোখে পড়বে এলপি গ্যাস বিক্রির দোকান। আবাসিক এলাকা ছাড়াও শহরের ছোট-ছোট গলিতে রয়েছে এলপি গ্যাসের দোকান। স্টেশনারি দোকানের পাশাপাশি গ্যাস বিক্রি, রড ও সিমেন্টের দোকানেও গ্যাস বিক্রি আবার কোথাও শুধুমাত্র বিভিন্ন কোম্পানির এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার ও গ্যাসের চুলার দোকান রয়েছে। কিন্তু এ সকল প্রতিষ্ঠানের বড় একটা অংশেরই নেই গ্যাস বিক্রির কোন অনুমতি। বিশেষ করে নগরী ছাড়াও খুলনার ৯ উপজেলা ও বিভাগের ৯ জেলায় একই চিত্র। এদিকে এসব দেখভাল করার জন্য পর্যাপ্ত জনবল সংকট রয়েছে বিস্ফোরক দপ্তরে। মাত্র ৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে বিভাগের দপ্তরের কার্যক্রম চলছে।

জানা যায়, খুলনায় পাইপ লাইনে গ্যাস না থাকায় এলপি গ্যাসের চাহিদা অনেক। যার ফলে সরকারি এলপি গ্যাসের পাশাপাশি বেসরকারি বসুন্ধরা, নাভানা, যমুনা, বেক্সিমকো, ওমেরা গ্যাসের চাহিদা রয়েছে খুলনার বাজারে। ইতোপূর্বে খুলনার শিপইয়ার্ড এলাকায় অবৈধভাবে বেসরকারী এসব সিলিন্ডারে গ্যাস রিফিল করে বাজারে ছেড়ে দেয় একটি ব্যবসায়ী মহল। যার ফলে সিল্ডিডারটি অত্যনÍ ঝূঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকে। এছাড়া বটিয়াঘাটার একটি গ্যাস কোম্পানিতে মেয়াদউত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডারে গ্যাস রিফিল করার অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমেও জরিমানা করা হয়েছে। মূলতঃ বাজারের মেয়াদ উর্ত্তীণ গ্যাস সিলিন্ডার এবং অনুমতি না নিয়ে গ্যাস বিক্রি করার বিষয় দেখভাল করে বিস্ফোরক দপ্তর। কিন্তু জনবল কম থাকার কারণে তারা বিষয়টি তদারকি করতে সক্ষম হচ্ছে না।

এদিকে সম্প্রতি এলপি গ্যাস বিক্রির নীতিমালা পরিবর্তনে জটিলতা আরও বেড়েছে। ফলে গত তিন মাস আগে যে নীতিমালা হয়েছে সেটা মেনে নিয়ে যেখানে সেখানে গ্যাস বিক্রি করা যায় না। এমনকি আবাসিক এলাকায় গ্যাস বিক্রির অনুমতিতে রয়েছে ব্যাপক জটিলতা। কিন্তু খুলনায় এসব নীতিমালা তোয়াক্কা না করেই বিক্রি হচ্ছে গ্যাস। একটি সূত্রে জানা যায়, খুলনা বিভাগের ১০টি জেলায় প্রায় ৮শ’ বৈধ গ্যাস বিক্রেতা রয়েছে। এর মধ্যে খুলনায় প্রায় ৫শ’। এরপর যশোর ও সাতক্ষীরা। তবে খুলনায় গ্যাস বিক্রির লাইসেন্স নেওয়ার অনুমতির অপেক্ষায় রয়েছে এখনও ৩শ’ গ্যাস বিক্রেতা। তারা লাইসেন্স নেওয়ার সকল নিয়ম নীতি পূরণ করতে পারছে না।

যার কারণে পাচ্ছে না গ্যাস বিক্রির অনুমতি। অথচ এসব প্রতিষ্ঠানগুলো বিনা অনুমতিতেই গ্যাস বিকিকিনি করছে। এদিকে খুলনা বিভাগীয় বিস্ফোরক দপ্তরের জনবল সংকট রয়েছে চরমে। যার কারণে সকল কার্যক্রমে রয়েছে কিছুটা ধীরগতি। দপ্তরটিতে মঞ্জুরিকৃত পদ ১০টা থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ৪টি। ১ জন বিস্ফোরক পরিদর্শক, ১ জন কারিগরি সহকারী বিস্ফোরক পরিদর্শক, ১ জন উচ্চমান সহকারী এবং ১জন গার্ড নিয়েই বিভাগীয় কার্যক্রম চলছে।

খুলনার বিস্ফোরক অধিদপ্তরের পরিদর্শক ফরিদ উদ্দিন আহমদ বলেন, জনবল কম থাকার কারণে আমাদের অনেক কাজই করাটা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাছাড়া এলপি গ্যাস বিক্রির অনুমতি দেওয়ার যে নীতিমালা রয়েছে, তাতেও পরিবর্তন হয়েছে। যার ফলে লাইসেন্স খুবই যাচাই-বাছাইয়ের পর দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, খুলনায় এখন অবৈধভাবে গ্যাস সিলিন্ডারে রিফিল করে গ্যাস বিক্রি হয় না। তবে মেয়াদউত্তীর্ণ বা অনুমতি ছাড়া কেউ গ্যাস বিক্রি করছে এমন সন্ধান পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।