শীতের দাপটে নাকাল রাজশাহীর জনজীবন, চরম দুর্ভোগে ছিন্নমূল মানুষ

প্রকাশিত: ১১:১৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩১, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক ; রাজশাহীতে দিনের ব্যবধানে একলাফে তাপমাত্রার পারদ নেমেছে প্রায় ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। গত শনিবার রাজশাহী অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেও রোববার (৩১ জানুয়ারি) সর্বনিম্ন তামপাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এটি সারা দেশের মধ্যে গতকালের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এছাড়া রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের এখন পর্যন্ত রেকর্ড সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এর আগে চলতি শীত মৌসুমে রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর ৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ফলে একদিকে রেকর্ড তাপমাত্রা হ্রাস, অন্যদিকে ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে রাজশাহীতে আবারও বেড়েছে শীতের তীব্রতা। এতে অসহনীয় হয়ে উঠেছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। কনকনে শীতে থরথর করে কাঁপছে এ অঞ্চলের মানুষ।

সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ বেড়েছে রাজশাহীর ছিন্নমূল মানুষের। বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন ও পথের ফুটপাতের ওপর খোলা আকাশের নিচে থাকা এসব মানুষের দিন-রাত কাটছে অবর্ণনীয় কষ্টে। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে নিদারুণ দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের আলো থাকলেও দুপুর গড়াতেই তা সাদা মেঘের আস্তরণে মিলিয়ে যায়।

ফলে হু হু করে বাড়েছে শীতের দাপট। আগামী দু’একদিনের মধ্যে এই অবস্থার কোনো উন্নতি নেই! বরং তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কারণে সর্বনিম্ন এই তাপমাত্রা আরও এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে আসতে পারে। আপাতত এমন শঙ্কার পূর্বাভাসই দিচ্ছে আবহাওয়া অধিদফতর।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আনোয়ারা বেগম বলেন, রোববার সকাল ৭টায় রাজশাহীতে ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কুড়িগ্রামে ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর পরই রয়েছে রাজশাহী।

আবহাওয়া কর্মকর্তা আনোয়ার বেগম আরো বলেন, সাধারণত দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ থাকলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। আর তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। অর্থাৎ রাজশাহীর ওপর দিয়ে বর্তমানে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকালের পর হঠাৎ করেই এই অঞ্চলের তাপমাত্রা এক অঙ্কের ঘরে নেমে এসেছে।

এদিকে শীতের তীব্রতায় রাজশাহীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় সমাজের বিত্তবান মানুষগুলোকে তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আব্দুল জলিল।

তিনি বলেন, রাজশাহী জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতার্তদের মধ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যক কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। তবে সরকারের পাশাপাশি সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো এগিয়ে আসলে শীতার্ত মানুষ এই শীতের অসহনীয় দুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষা পাবেন।