সীমান্তে নির্মাণাধীন পাঁকা স্থাপনা ভেঙ্গে দিল বিজিবি

প্রকাশিত: ১১:০৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩১, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক ; এক দিকে আন্তর্জাতিক আইন অমান্য, অন্যদিকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) প্রচণ্ড চাপের মুখে জিরোলাইনে এক বাংলাদেশি পরিবারের নির্মাণাধীন ঘরের আধা-পাকা স্থাপনা ভেঙ্গে দিয়েছে বিজিবি।

রোববার বিকাল সাড়ে ৩টায় দিকে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের সীমান্তঘেষা খলিশাকোটাল গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার খলিশাকোটাল সীমান্তের আন্তর্জাতিক মেইন পিলার নং-৯৩৫ এর সাব পিলার নং ২ এস থেকে ৫০ গজের দূরে ওই এলাকার মৃত নূরুল হকের ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৪০) আড়াই বছর পূর্বে একটি আধাপাঁকা ঘর ইট দিয়ে নির্মাণ করেন।
বিষয়টি কোচবিহার জেলার দিনহাটা থানার অধীনে বসকোঠাল ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যদের নজরে আসলে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি অধীন শিমুলবাড়ী কোম্পানি কমান্ডারকে লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করেছে।

এরই প্রেক্ষিতে ওই সীমান্তে রোববার দুপুর ১২টার দিকে বিজিবি ও বিএসএফের মাঝে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবি’র পক্ষে নেতৃত্ব দেন লালমনিরহাট ১৫ বিজিরি অধীন শিমুলবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আব্দুল হক ও বিএসফের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ৩৮ ব্যাটালিয়নের বসকোঠাল ক্যাম্পের ইন্সপেক্টর রিয়াভিট।

বৈঠকে উভয়পক্ষ তদন্ত করে নির্মাণাধীন সিরাজুল ইসলামের আধাপাঁকা বাড়িটির একাংশ ভেঙ্গে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়। পরে বিকাল সাড়ে ৩ টায় শিমুলবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার আব্দুল হক খলিশাকোঠাল ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এরশাদুল হক সঙ্গে নিয়ে ওই বাড়ীর রান্না ঘরের একাংশ পাকা স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।

অন্যদিকে একই সীমান্তের ১০ বছর আগে আধাপাকা বাড়ী নির্মাণ করে মোস্তফা, মোজাম্মেল, মোজাফ্ফর, আল আমিন, আনারুল ও শহিদুল। তাদের বাড়ী জিরোলাইনে হওয়ায় বিএসএফ সদস্যরা তাদেরও বাড়ী-ঘর ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দেয়।

বাড়ীর মালিক সিরাজুল হক ও জানান, আমরা গরীব মানুষ। জমিজমা নেই। সামান্য জমিতে কষ্ট করে বাড়ীঘর নির্মাণ করেছি। সেটা ভেঙ্গে দেওয়া হলো। ক্ষতি হলো অনেক। আর যেন নতুন করে কোন ক্ষতি না হয় সেই আবেদন করছি।

গৃহবধূ আসমা হুল হোসনা ও হাসি জানান, আমাদের বিয়ে হয়েছে প্রায় ১০ বছর পূর্বে। কিন্তু কেউ আমাদের বাড়ীঘর ভাঙ্গতে বলে নাই। সীমান্তে আমরা দু’দেশের মানুষজন একই মহল্লায় বসবাস করছি। অন্য এলাকায় আমাদের জমিজমা নেই। বাড়ীঘর ভেঙ্গে দিলে আমরা যাবো কোথায়?

সীমান্তঘেষা খলিশাকোঠাল (৯ নং ওয়ার্ডের) ইউপি সদস্য এরশাদুল হক জানান, বিজিবি’র উপস্থিতিতে বাড়িটির কিছু অংশ ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।

লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি’র অধীন শিমুলবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আব্দুল হক জানান, বিএসএফের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে জিরোলাইনে বাড়ী-ঘর নির্মাণ করায় একটি বাড়ীর কিছু অংশ ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।