শেখ হাসিনার পাঠানো ফল মধ্যরাতে ঘোষণা ইসির: রিজভী

প্রকাশিত: ৩:৫১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৯, ২০২১

সময় সংবাদ ডেস্কঃবিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, ‘চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে ভোট ডাকাতির ডিজিটাল মেশিন ইভিএমে ভোটাভুটি হলেও নির্বাচন শেষ হওয়ার ১০ ঘণ্টা পরে রাত পৌনে ২টায় রিটার্নিং কর্মকর্তা গণভবন থেকে নিশিরাতের সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাঠানো ফলাফল ঘোষণা করেন।’

শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন

রিজভী বলেন, ‘গত ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে আরও একটি নজিরবিহীন তামাশার রক্তাক্ত নির্বাচন প্রত্যক্ষ করলো দেশবাসী। দিনভর সহিংসতা, খুনোখুনি, গোলাগুলি, ভোটকেন্দ্র দখল, জাল ভোট প্রদান, ইভিএমের গোপন কক্ষে সরকারি ক্যাডারদের তাণ্ডব এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় ধানের শীষের প্রার্থীদের সকল এজেন্টকে মারধর করে তাড়িয়ে দিয়ে ভোট ডাকাতির উৎসব করেছে আওয়ামী লীগ।’

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘ইভিএমে ফলাফল দিতে সর্বোচ্চ এক-দুই ঘণ্টার বেশি লাগার কথা নয়। ডাকাতির পর ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে হিসাব মেলাতেই এই দীর্ঘ সময় লেগেছে। বহু হিসাব-নিকাশ করে তারা দেখিয়েছে নির্বাচনে ২২ শতাংশ ভোট পড়েছে। তার মানে হচ্ছে, বন্দরনগরীর ৭৮ শতাংশের বেশি ভোটার নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। এই প্রত্যাখ্যান ভোটসন্ত্রাসী ক্ষমতাসীনদের বলদর্পী শাসন-শোষণ ও নতজানু-মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপি-নেতারা ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনী মিলে যে ভোট ডাকাতির পাতানো নির্বাচন সম্পন্ন করেছে, সেটা সরকারি শত বাধার সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও মিডিয়ার কারণেই দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে উন্মোচিত হয়েছে। এই নির্বাচন ঘিরে নিহত দু’জন এবং ঘাতক সবাই আওয়ামী লীগের। তবে, সেসব খুনি অথবা প্রকাশ্যে গুলিবর্ষণকারী কেউ গ্রেফতার হয়নি, গ্রেফতার হয়েছেন বিএনপি কাউন্সিলর প্রার্থী ইসমাইল হোসেন বালি। কারণ তিনি ভোট ডাকাতির প্রতিবাদ করেছিলেন। নির্বাচনের পরও উত্তেজিত বাতিকগ্রস্তের মতো উদ্ভট উল্লাসে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর পৈশাচিক নিপীড়ন-নির্যাতন করে চলেছে।’

রিজভী বলেন, ‘পদ বাঁচাতে’ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নিজের বাসায় অবরুদ্ধ অবস্থায় অনলাইনে সংবাদ সম্মেলনে গতকাল বলেছেন, ‘মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভালো নির্বাচন হয়েছে। বিএনপি কেন্দ্র দখলসহ সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে।’ আসলে আওয়ামী নেতারা আত্মমুগ্ধ, চাটুকারদের প্রতি খুব বেশি সংবেদনশীল আর লোভ আছে অতিমাত্রায়। যে কারণে তারা চোখ থাকতেও অন্ধ হয়ে আছে, শুধুমাত্র ক্ষমতার রুটির ভাগের জন্য।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেবের আপন ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা গতকাল কোম্পানীগঞ্জে নাগরিক সভায় বলেছেন, ’ওবায়দুল কাদের সাহেব ‘পদ বাঁচাতে’ অপশক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন’। আপনি মানুষের চোখে ধুলো দিয়ে কতদিন টিকে থাকবেন। কিসের সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে? চট্টগ্রামে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। রক্তপাত হয়েছে। এটাকে মেনে নেওয়া যায় না। সেখানে জোর করে ইভিএম ব্যবহার করে একজন প্রার্থীর পক্ষে ভোট নিয়ে বিজয়ী ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ এখন পথহারা।’