নওগাঁয় বৃদ্ধি পাচ্ছে রেশম চাষ দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম প্রকাশিত: ৩:০০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৫, ২০২১ নিজস্ব প্রতিবেদক ; নওগাঁয় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে রেশম চাষ। অনেকেই এই রেশম চাষ করে সফলতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমাদের দেশে বহু ধরনের কৃষিপণ্য উৎপাদিত হয়ে থাকে। এসব কৃষিপণ্যের মধ্যে এক সময় তুঁত চাষ ছিলো অন্যতম। তুঁত চাষে অল্প পরিশ্রমে বেশি লাভবান হওয়া যায়। বাড়িতে বসে থাকা নারীরাও তুঁত গাছের চাষ করতে পারেন বলে এতে খরচ কম হয়। একই জমিতে বছরে ৩ বারের বেশি ফসল চাষ করা হলেও তেমন লাভ আসে না। কিন্তু তুঁত চাষ ২-৪ বার করা যায়। এতে যেমন অধিক ফসল পাওয়া যায়, তেমনি লাভও হয় বেশি। কাপড় বুননের জন্য সুতার বিকল্প নেই। মোটা সুতার যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। আর মোটা সুতা দিয়ে খুবই সুন্দর ও আকর্ষণীয় কাপড় তৈরি করা যায়। যদি অধিক হারে রেশম চাষের মাধ্যমে উৎপাদিত মোটা সুতা দিয়ে কাপড় তৈরির ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তাহলে স্থানীয় দক্ষ কারিগর দিয়ে রেশম সুতা ব্যবহারের ফলে সামান্য পরিশ্রমে বেশি কাপড় বুনে অধিক লাভ করা সম্ভব। রেশম চাষ বদলে দিতে পারে নওগাঁর অস্বচ্ছল জনগোষ্ঠীর জীবনধারা। এ রকমই রেশম চাষী বেলাল হোসেন ব্যাপক ভাবে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা থাকায় অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন রেশম চাষ করে। নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার ভীমপুরে রেশম চাষে দ্রুত সাফল্য এসেছে। ইতিমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন যুবক-যুবতীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এসব জমি থেকে রেশম গুটি উৎপাদন হচ্ছে। যা থেকে প্রতি মাসে প্রায় ৮-১০ হাজার টাকার রেশম সুতা পাওয়া যাচ্ছে। রাজশাহীর রেশম গবেষণা কেন্দ্রের অধীনে মহাদেবপুর উপজেলায় রেশম চাষ করা হয়। গবেষণা কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ বেকার যুবক-যুবতীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় উপজেলার ভীমপুর ইউপির ক্যানেলের প্রায় দুই কি. মি. রাস্তার পাশে তুঁত গাছ চাষ করছেন বেলাল হোসেন (৫৫)। রেশম হচ্ছে এক ধরনের পোকার মুখ থেকে নির্গত লালা দ্বারা তৈরি আঠা, যা বাতাসে শুকিয়ে গিয়ে তৈরি হয় আঁশ বা সুতা। আর এটিই হলো রেশম সুতা। বিভিন্ন পশু পাখির মতো এ পোকাগুলোও বসবাসের জন্য ঘর তৈরি করে। এদের তৈরি ঘর বা খোল রেশম গুটি নামে পরিচিত। এই গুটিতে থাকে শুধু সুতা আর আঠা। গরম পানিতে রেশম গুটি প্রয়োজনমতো সিদ্ধ করে নিয়ে সুতা উঠাতে হয়। সুতা উঠানোর পর মরা পোকাগুলোও ফেলনা নয়। এসবে থাকে আমিষ ও ফ্যাট। রেশম পোকার ফ্যাট দিয়ে বিভিন্ন মেশিনের লুব্রিকেটিং অয়েল তৈরি হয়। এটি বিভিন্ন কসমেটিকস ও ওষুধ শিল্পে ব্যবহৃত হয়। আর আমিষ দিয়ে হাঁস, মুরগি, মাছের খাবারসহ জৈব সার তৈরি হয়। তুঁত চাষী বেলাল হোসেন বলেন, আমি দুই বছর আগে সরকারি ভাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে তুঁত গাছ চাষ শুরু করে সফল হয়েছি। আমি এর আগে মানুষের বাড়িতে কাজ করতাম। এখন রেশম চাষ করে আমার ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে। রেশম পোকার প্রধান খাদ্য তুঁত গাছের পাতা। এসব ক্যানেলের ধারের জমিতে বছরে দু’বার তুঁত গাছ চাষাবাদ করি। প্রতি কেজি রেশম সুতার মূল্য প্রায় ৫-৭ হাজার টাকা। রেশম গবেষণা কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ বিনামূল্যে ১০টি হারে পলুর ডিম (পলু হলো রেশম কিট) বিতরণ করে থাকেন। অন্য ফসলের সঙ্গে বছরে দু’বার আমরা রেশম চাষ করে আর্থিক ভাবে অনেকটা লাভবান হয়ে থাকি। তাই সরকারি ভাবে যদি কোন সহযোগিতা পেতাম তাহলে রেশম চাষ করে আমার সফলতার পাশাপাশি গ্রামের বেকার সমস্যা সমাধান হতো। মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অরুন চন্দ্র সাহা বলেন, মহাদেবপুর উপজেলার রোড এবং ক্যানেলে পাশের তুঁত গাছ চাষ পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু হয়েছে এবং লাভবানও হয়েছেন উদ্যোক্তারা। মহাদেবপুরে আরও ৩ জন রেশমের চাষ শুরু করেছেন তবে বেলাল হোসেন ব্যাপক ভাবে সাফল্য পেয়েছেন। তিনি বলেন, চলতি বছর তিনি ১৫ কেজি রেশম উৎপাদন করেছেন। যার আনুমানিক মূল্য ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা। সেই সঙ্গে সুতারও যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। তুঁত চাষে অল্প পরিশ্রমে বেশি লাভবান হওয়া যায়। রেশম গবেষণা কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ও কৃষি বিভাগ থেকে চাষীদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে এবং আগামীতেও করা হবে। Share this:FacebookX Related posts: নওগাঁয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত নওগাঁয় ৪ কেজি গাঁজাসহ আটক-৩ নওগাঁয় একদিনে ১৫৭ জন হোম কোয়ারেন্টাইনে, ১১৬ জনের রির্পোট নেগেটিভ নওগাঁয় বজ্রপাতে নিহত ২ নওগাঁয় নারীর মৃতদেহ উদ্ধার নওগাঁয় আরও ৮৮ জন করোনায় আক্রান্ত নওগাঁয় প্রবাসী নারীর স্বাক্ষর জালিয়াতি করে স্বামীকে ভুয়া তালাক নওগাঁয় সম্পত্তি লিখে নিয়ে বাবাকে দঁড়ি দিয়ে বেঁধে রেখেছে সন্তানরা নওগাঁয় করলা চাষে ভাগ্যের বদল হয়েছে কৃষক জলিলের নওগাঁয় চালের দাম না কমলেও কমেছে ধানের নওগাঁয় বিধবাকে ধর্ষনের অভিযোগে ইমামসহ ৭জনের বিরুদ্ধে মামলা: গ্রেফতার-২ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নওগাঁয় SHARES Matched Content দেশের খবর বিষয়: নওগাঁয়বৃদ্ধি পাচ্ছেরেশম চাষ