দখলমুক্ত হচ্ছে না রেলওয়ের জমি

প্রকাশিত: ১১:৩৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১১, ২০২১
দখলমুক্ত হচ্ছে না রেলওয়ের জমি

অনলাইন ডেস্ক : চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুরে দখলদারদের অপতৎপরতায় দখলমুক্ত হচ্ছে না রেলওয়ের কয়েকশ একর জমি। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নিলেও অদৃশ্য কারণে তা হচ্ছে না।

পশ্চিম রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তির রহনপুর-আমনুরা রেলপথের গোলাবাড়ী থেকে রহনপুর হয়ে ভারত সীমান্তবর্তী শিবরামপুর পর্যন্ত রেলওয়ের মোট ৩৭৮ দশমিক ৮৮ একর সম্পত্তি রয়েছে। এর মধ্যে রহনপুর রেলস্টেশন ও তার আশপাশে থাকা ১৪৭ দশমিক ৮৪ একর জায়গা রেলের দখলে রয়েছে। বাকি সম্পত্তি বেদখলে।

এর মধ্যে ০ দশমিক ৪৫ একর জায়গা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ব্যবহারের জন্য লীজ দেয়া হয়েছে। এছাড়া কৃষি জমি হিসেবে ৮১ দশমিক ২৪ একর, জমি জলাশয় হিসাবে ১২ দশমিক ০১ একর, বিএডিসির সার গুদামের জন্য ৫ দশমিক ০৩ একর জায়গা লীজ দেয়া হয়েছে। পতিত রয়েছে ৫৪ দশমিক ১৪ একর জমি এবং অবৈধ দখলে রয়েছে ৭৮ দশমিক ১৬ একর জমি।

এছাড়া, রহনপুর রেল স্টেশনের পশ্চিম পাশে আম বাজার ও পূর্ব পাশে রেলের জায়গা দখল করে দৈনিক বাজার বসিয়ে রহনপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ লক্ষ লক্ষ টাকা খাজনা আদায় করছে। বিষয়টি অবৈধ হওয়ায় রেল কর্তৃপক্ষ পৌরসভাকে আইনি নোটিশ প্রদান করে বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলীয় জোনের জোনাল ম্যানেজার রহনপুর রেলষ্টেশন পরিদর্শনে এলে তাকে বিষয়টি অবহিত করেন জনপ্রতিনিধিরা।

এদিকে, লীজ নেয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তাদের লীজকৃত জায়গার কয়েকগুণ জায়গা অবৈধ দখলে নিয়ে মার্কেট নির্মাণসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করছে। এতে করে রেলওয়ে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।

দখলদারদের মধ্যে রহনপুর স্টেশন বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি আশরাফুল ইসলাম আশরাফ, মোহাম্মদ হোসেন, সানোয়ার হোসেন ও বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম তুহিন রহনপুর স্টেশন বাজার এলাকায় রেলওয়ের জায়গা অবৈধ ভাবে দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এছাড়া, রহনপুর কলেজ মোড় এলাকায় রেলওয়ের জলাশয় দখল করে ওই এলাকার হাবিবুর রহমান হবি ও আশরাফুল ইসলাম বড় বড় মার্কেট নির্মাণ করেছেন। হিরুপাড়ায় জাকির হোসেন এমএম ফুড নামে একটি বিশাল বেকারী কারখানা নির্মাণ করেছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত দখদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা রেলওয়ের জায়গা অবৈধ দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেন।

তারা বলেন, রেলওয়ের জায়গা লীজ নিয়ে বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করছেন। রেলওয়ের প্রয়োজনে লীজ নেয়া জায়গা যেকোনো সময় ছেড়ে দিতে চান।

পশ্চিম রেলওয়ের পাকশী ডিভিশনের ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নুরুজ্জামান বলেন, রেলওয়ের জায়গা অবৈধ দখলদারদের দখলমুক্ত করতে গেলে স্থানীয় দখলদারদের প্ররোচণায় কিছু লোকজন বাধার সৃষ্টি করছে। যারা লীজ নিচ্ছেন তাদের এক বছরের জন্য লীজ দেয়া হয়। যা প্রতি বছর নবায়ন করার কথা থাকলেও তা না করে বছরের পর বছর অবৈধ ভাবে দখল করে ব্যবহার করছে।

তিনি বলেন, রেলওয়ের জায়গা দখলমুক্ত করতে সংশ্লিষ্টদের গত বছরের ০৮ ডিসেম্বর নোটিশ দেয়া হয়েছে। তারপরও রেলওয়ের জায়গা দখলমুক্ত না হলে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ কাজে এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তা কামনা করছি।

এদিকে, ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ রহনপুর রেল স্টেশন এলাকায় পরিকল্পিত মার্কেট নির্মাণ করে ব্যবসায়ীদের ব্যবহারের সুবিধা প্রদানের জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছে।

রেলওয়ের জায়গা দখলমুক্ত করে রহনপুরকে পূর্ণাঙ্গ রেলবন্দরে পরিণত করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।