‘আগামী ৫০ বছরের জন্য মাস্টারপ্ল্যান প্রস্তুত করতে হবে’

প্রকাশিত: ৮:৪৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২, ২০২১

নিউজ ডেস্কঃ সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেছেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এলোকেশন অব বিজনেস অনুযায়ী জরুরি ভিত্তিতে আগামী ৫০ বছরের জন্য মাস্টারপ্ল্যান প্রস্তুত করতে হবে।

তিনি বলেন, আগামী ৩ মাসের মধ্যে এ মাস্টারপ্ল্যান দেখতে চাই। এছাড়াও সমাজসেবা অধিদপ্তরের বাজেট ৪০০ কোটি থেকে অনিতবিলম্বে বেড়ে দশ হাজার কোটি টাকা হোক সে লক্ষ্যে কাজ করতে চান বলে জানান সমাজকল্যাণ মন্ত্রী।

শনিবার (২ জানুয়ারি) ২২তম জাতীয় সমাজসেবা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মিলনায়তনে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, করোনাকালীন সময়ের জন্য আজ প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেন নি। তিনি আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই দায়িত্ব পালনে আমরা বদ্ধ পরিকর।

তিনি বলেন, আগামী ১৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী জিটুপি এর মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং এ ভাতা প্রদান উদ্বোধন করবেন।

মন্ত্রী বলেন, ভাতা প্রদানে যাতে কোনো অনিয়ম না হয়। প্রকৃত উপকারভোগীরা নির্বিঘ্নে যেনো এ ভাতা পায় সে জন্য অনলাইন জিটুপি ভাতা প্রদান ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, সমাজসেবা অধিদপ্তরের সবার প্রতি অনুরোধ রেখে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর যে প্রত্যাশা সরাসরি উপাকারভোগীর হাতে ভাতা টা তুলে দিতে কাজ করি।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে আপনারা সবাই সজাগ ও সচেষ্ট থাকবেন।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের উন্নয়নের বিষয়ে আলোকপাত করতে গিয়ে মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ আরও বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তর সামাজিক নিরাপত্তা ও দারিদ্র বিমোচন কর্মসূচির আওতায় প্রায় দুই কোটি জনগোষ্ঠিকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগীতা করে যাচ্ছে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু, সংসদ সদস্য (এমপি) অ্যারোমা দত্ত, বাংলাদেশ সমাজসেবা অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মো. সাফায়েত হোসেন তালুকদার, বাংলাদেশ সমাজসেবা কর্মচারী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান মো. গোলাম ফারুক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী।

অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, সমাজসেবা অধিদপ্তর সমাজের প্রান্তিক মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। শিশুদের জন্যও অধিদপ্তর নিয়েছে কর্মসূচি। দারিদ্র্য বিমোচনে এ সেক্টরের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। সে লক্ষ্যেই সুদ-মুক্ত ঋণের পরিধি আরও বাড়ানোর জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে। একইসঙ্গে পল্লীর উন্নয়নে সেখানকার মানুষের কর্মদক্ষতা উন্নয়নের জন্য সাধারণ মানুষসহ প্রতিবন্ধী ও শিশুদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন করা হচ্ছে।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেন, দারিদ্র্য ও ক্ষুধা মুক্ত সমাজ গঠনে আমাদের কার্যক্রম চলমান আছে। আমরা চাই প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার জন্য। যারা একেবারেই গৃহহীন, ভূমিহীন, তাদের জন্যও সমাজসেবার প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম চলমান আছে। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন করে ঢেলে সাজানো এবং নতুন আরও কিছু কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। পদোন্নতি এবং অনেকগুলো নতুন পদ সৃজন করতে হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা চলছে, আশা করি ভালো কিছু হবে। এখন আমাদের প্রত্যেকের নিজের জায়গা থেকেই আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে কাজ করতে হবে। নিজের উন্নয়ন না হলে সমাজের উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমারা আশা করি জাতি গঠনে সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় হবে আমাদের সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) শেখ রফিকুল ইসলাম। ‘ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে সেবা ও সুযোগ প্রান্তজনে’ প্রতিপাদ্যে এবারের জাতীয় সমাজসেবা দিবসের উদ্বোধন ও আলোচনা সভা শেষে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিজস্ব এবং অধিদপ্তরের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন শিল্পীরা। অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।