আদা-রসুনের দামও চড়া

প্রকাশিত: ৫:২৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩, ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার : চিনি, তেল, পেঁয়াজের সঙ্গে এবার দাম বেড়েছে আদা ও রসুনের। মান ভেদে সপ্তাহের ব্যবধানে আদার দাম কেজিতে ৩০ টাকা এবং রসুনের দাম কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, রামপুরা, খিলগাঁও, মালিবাগ ও শান্তিনগর অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এক সপ্তাহ আগে যে রসুনের (দেশি) কেজি ১৬০ টাকা বিক্রি হতো, সেই রসুন এখন ২০০ টাকা। আর ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আদা ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ দিকে খুচরা বাজারের দামের সঙ্গে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর দামের পার্থক্য পাওয়া গেছে। তবে টিসিবির হিসাবেও সপ্তাহের ব্যবধানে আদা ও রসুনের দাম বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকার মতো। এদিকে বাজারে শীতের সবজি ভরপুর থাকলেও তা ক্রেতাদের স্বস্তি দিচ্ছে না। সরবরাহ বাড়লেও কোনো সবজির দাম কমেনি, বরং কিছু সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে।

রামপুরা অঞ্চলের বাজারে ভালো মানের দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৬০-১৭০ টাকা। আর আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৪০-১৫০ টাকা। রসুনের মতো এ অঞ্চলের বাজারগুলোতে বেড়েছে আদার দামও। গত সপ্তাহে যে আদার কেজি ১১০-১২০ টাকা ছিল, এখন দাম বেড়ে সেই আদা বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকা কেজি।

আদা রসুনের দাম বাড়ার বিষয়ে রামপুরার ব্যবসায়ী জামাল হোসেন বলেন, আদা-রসুনের দাম এখন বেশ চড়া। আমাদের আগে কেনা বলে দেশি রসুন ১৮০ টাকা এবং আদা ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। কিন্তু দু’দিন পরে এই দামে আর বিক্রি করা সম্ভব হবে না। কারণ পাইকারিতে ইতোমধ্যে আদা ও রসুনের দাম বেড়েছে।

রামপুরার মতো শান্তিনগর বাজারেও আদা ও রসুন বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে এ বাজারে ঝুলিয়ে রাখা মূল্য তালিকার সঙ্গে দামের মিল নেই। মূল্য তালিকায় আদা ১২০ টাকা এবং রসুনের কেজি ১৭০ টাকা লেখা হলেও আদা ১৫০ টাকা এবং রসুন ১৮০-২০০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মমতা স্টোরের মালিক বলেন, আদা ও রসুনের দাম বেড়েছে। আমাদের এ মূল্য তালিকা গত সপ্তাহের। নতুন দামের তালিকা এখনও টানানো হয়নি। তাই তালিকার সঙ্গে দামের কিছুটা পার্থক্য রয়েছে।

এ ব্যবসায়ী বলেন, দাম বাড়ার কারণে এখন দেশি রসুন ১৮০-২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা বড় রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে দেশি রসুন ১৭০ টাকা এবং আমদানি করা রসুন ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। এছাড়া গত সপ্তাহে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করা আদার দাম বেড়ে এখন ১৫০ টাকা হয়েছে।

টিসিবি দ্রব্যমূল্যের দামের যে তথ্য প্রকাশ করেছে তার তথ্য অনুযায়ী, দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৬০-১৮০ টাকা। আমদানি করা রসুন আগের সপ্তাহের মতো ১৪০-১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে । আর আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৭০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১০০-১৭০ টাকা।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজ, আমদানি করা পেঁয়াজ, আলু, চিনি, সয়াবিন তেল, পাম অয়েলের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে। দেশি পেঁয়াজ ১৬০-১৮০ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ৬০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬২-৬৫ টাকা কেজি। ৫ লিটারের সয়াবিল তেল বিক্রি হচ্ছে ৪৭০-৫১৫ টাকা।

তবে খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে ধরেই চিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৬৬ টাকা, ৫ লিটারের সয়াবিন তেলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৫১৫ টাকা। কিন্তু টিসিবি বলছে- এক সপ্তাহ আগে চিনির কেজি ৬০ টাকা এবং ৫ লিটারের সয়াবিন তেল ৪৫৫ টাকায় বিক্রি হয়।

এ বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মিলন বলেন, কে কোন মূল্য তালিকা প্রকাশ করল তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। আমরা যে দামে মাল কিনি তার ওপর নির্ভর করে বিক্রি করি। চিনি ও তেলের দাম কয় সপ্তাহ ধরেই বাড়তি। তবে চলতি সপ্তাহে নতুন করে দাম বাড়েনি। দাম যা বাড়ার গত সপ্তাহেই বেড়েছে। এ সপ্তাহে নতুন করে পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম বেড়েছে। যে কারণে আমরাও বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।

মালিবাগ থেকে বাজার করা ইয়াসিন বলেন, বাজারে তো এখন সব জিনিসের দাম বাড়তি। এক কেজি পেঁয়াজের দাম ১৫০ টাকা, রসুনের কেজি ১৯০ টাকা, আদার দাম ১৫০ টাকা। এর সঙ্গে তেল, চিনির দামও তো বাড়তি। জিনিসপত্রের এমন বাড়তি দাম কি করে স্বস্তি দেবে?