কে এই কাসেম সোলাইমানি?

প্রকাশিত: ৩:৪৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩, ২০২০

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ডসের কমান্ডার কাসেম সোলাইমানি নিহত হয়েছেন। এছাড়া ওই হামলায় আরো ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।ইরানের বিপ্লবী গার্ডস জেনারেল কাসেমের মৃত্যুর কথা স্বীকার করে বলেছে মার্কিন হেলিকপ্টার থেকে হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।এ ঘটনার পর ভয়ঙ্কর প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছেন ইরানের বিপ্লবী গার্ডস বাহিনীর সাবেক কমান্ডার মোহসেন রেজাই।আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ইরানের সশস্ত্র বাহিনীতে জেনারেল কাসেম সোলেমানি ছিলেন একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। রাষ্ট্রীয়ভাবে তাকে দেয়া হত জাতীয় বীরের সম্মান।তার কুদস ফোর্স কাজ করে মূলত বিপ্লবী গার্ডস বাহিনীর ‘ফরেইন উইং’ হিসেবে।

এই বাহিনী জবাবদিহি করে সরাসরি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির কাছে।২০১৮ সাল থেকে তার আঞ্চলিক প্রভাব প্রকাশ্যে চলে আসে। তখন ইরাক সরকার গঠনে শীর্ষ আলোচনায় তিনি জড়িয়ে পড়েছিলেন।দুই দশকেরও বেশি আঞ্চলিক প্রভাববলয়ে থাকার পর তার ওপর এই হামলার ঘটনা খুব অবাক করা বিষয় নয়।সম্প্রতি বাগদাদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যখন নতুন সরকার গঠন করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তখন থেকেই তিনি দেশটিতে অবস্থান করছিলেন।সরকার গঠনের ক্ষেত্রে তার ছায়া কাজ করে আসছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরানে সবচেয়ে বড় সেলিব্রেটি হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হয়। ইনস্টাগ্রামে তার বিপুল অনুসারী রয়েছেন।২০১৩ সালে সিরিয়া যুদ্ধে ইরানের হস্তক্ষেপের পর তিনি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তার প্রোফাইল যুদ্ধক্ষেত্রের ছবি, তথ্যচিত্র, গানের ভিডিও ও অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রের পোস্টে ভারী হয়ে ওঠে।

গত অক্টোবরে ইরানি টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ২০০৬ সালের ইসরাইল-হিজবুল্লাহ লড়াইয়ের সময় তিনি লেবাননে ছিলেন। এসময় তিনি মাঠে থেকে যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন।তার শত্রু ও মিত্র– উভয় স্বীকার করে নিয়েছেন যে ইরানের আঞ্চলিক প্রভাবের মূল স্থপতি হলেন তিনি। জিহাদি বাহিনীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন।আবার ইরাক ও সিরিয়া ছাড়াও গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের কূটনৈতিক শক্তি বাড়িয়েছেন।২০১৭ সালে টাইমের সবচেয়ে প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির একজন হিসেবে তাকে নিয়ে লিখেছেন সিআইএর বিশ্লেষক কিনেথ পোলাক তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের শিয়াদের কাছে তিনি জেমস বন্ড, এরউইন রোমেল ও লেডি গাগা‘আর পশ্চিমারা মনে করেন, বিদেশে তিনি ইরানি ইসলামী বিপ্লব রফতানি করেছেন, সন্ত্রাসবাদে সমর্থন দিয়েছেন ও পশ্চিমাপন্থী সরকারগুলো হটাতে ভূমিকা পালন ও বিদেশের যুদ্ধে ইরানের জড়িয়ে পড়ার নেতৃত্ব দিয়েছেন।অর্থনৈতিক সংকটে ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে বাইরে থেকে যুক্তরাষ্ট্রও নতুন করে চাপ বাড়িয়েছিল।২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্র যখন আফগানিস্তানে হামলা চালায়, তখন থেকেই তিনি আল-কুদশ ফোর্সের নেতৃত্বে ছিলেন।