হালনাগাদ ভোটার তালিকার খসড়া প্রকাশ করা হবে ২০ জানুয়ারি

প্রকাশিত: ১:৪৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩, ২০২০

নিউজ ডেস্ক : ভোটার তালিকা হালনগাদের খসড়া প্রকাশের সময়সূচিতে পরিবর্তন এনেছে নির্বাচন কমিশন। এ বছর ২০ জানুয়ারি গত বছরের হালনাগাদ ভোটার তালিকার খসড়া প্রকাশ করা হবে কমিশন মাঠ কর্মকর্তাদের জানিয়ে দিয়েছে। হালনাগাদ কর্মসূচি ২০১৯-এ (২০০১-২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের) নতুন প্রায় ৯৬ লাখ নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। মৃতদের ১৫ লাখের তথ্য সংগ্রহ হয়েছে। আর স্থানান্তর হয়েছে এমন আবেদন ৪ লাখেরও বেশি।

গত বুধবার নতুন বছরের প্রথম দিনে ‘খসড়া প্রকাশের সময়সূচিতে’ সংশোধন এনে এ-সংক্রান্ত ইসির সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত সব উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। এর মাধ্যমে দীর্ঘদিনের রেওয়াজ ২ জানুয়ারি খসড়া প্রকাশের সময়সূচিতে পরিবর্তন এল। ইসির সহকারী সচিব মো. মোশাররফ হোসেন স্বাক্ষরিত ইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০ জানুয়ারি হালনাগাদ, ২০১৯ এর খসড়া প্রকাশ করা হবে। এ সময়সূচি গণবিজ্ঞপ্তি আকারে স্থানীয়ভাবে জানাতে হবে। জেলা নির্বাচন অফিস, উপজেলা নির্বাচন অফিস, ইউনিয়ন-ওয়ার্ড-ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড- অথবা গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান ও সংশোধনকারী কর্তৃপক্ষের অফিসে খসড়া তালিকা প্রকাশ করতে হবে।

প্রতিবছর ১ জানুয়ারি যারা ভোটার যোগ্য হন, হালনাগাদে তাদের তালিকা খসড়া প্রকাশ করে দাবি-আপত্তি-নিষ্পত্তি শেষে ৩১ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হত। ভোটার তালিকা আইনে বলা রয়েছে, প্রতিবছর ২ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি সময়ের মধ্যে নির্ধারিত পদ্ধতিতে হালনাগাদ করা হবে। তবে শর্ত থাকে যে, যদি ভোটার তালিকা এভাবে হালনাগাদ করা না হয় তাহলে এর বৈধতা বা ধারাবাহিকতা ক্ষুণ্ন হবে না। ইসির সহকারী সচিব মোশাররফ হোসেন বলেন, আগে ২ জানুয়ারি করার রেওয়াজ ছিল, বাধ্যবাধকতা ছিল না। এবার অনিবার্য কারণে ২০ জানুয়ারি করা হয়েছে। এটা কমিশনের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত। এতে আইনি কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।

খসড়া প্রকাশের পর ১৫ দিনের মধ্যে দাবি- আপত্তি ও নিষ্পত্তি করা হবে। এ কর্মকর্তা জানান, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের নতুন সময়সূচি নির্ধারণের বিষয়ে আইন সংশোধনের উদ্যোগ রয়েছে। ৩১ জানুয়ারির পরিবর্তে ১ মার্চ করার প্রস্তাব রয়েছে। ইতোমধ্যে আইন সংশোধন প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আগামী অধিবেশনে তা পাস হয়ে এলে খসড়ার উপর দাবি/আপত্তিগ্রহণ, নিষ্পত্তি, সনি্নবেশকরণ এবং চূড়ান্ত প্রকাশের তারিখ নির্ধারিত হবে। ইতোমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেছে, আইন সংশোধন করে হালনাগাদের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা ১ মার্চ করা হতে পারে। ২০১৮ সালে এপ্রিলে সরকার ১ মার্চকে ভোটার দিবস হিসেবে পালনে সম্মতি দেয়।

গত বছর প্রথমবারের মতো কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি নিয়ে ১ মার্চ ‘ভোটার দিবস’ উদযাপনও করে সাংবিধানিক সংস্থাটি। এ দিবসেই ভোটার তালিকা চূড়ান্ত সময়সূচি রাখতে চাইছে ইসি। হালনাগাদ কর্মসূচি, ২০১৯ এ সারা দেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ শুরু হয়েছিল ২৩ এপ্রিল। ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী (২০০১-২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে যাদের জন্ম ) এসব নাগরিকের ছবি, চোখের আইরিশ ও ১০ আঙুলের ছাপসহ নিবন্ধন কাজ নভেম্বরে শেষ হয়। ২০২০ থেকে ২০২২ সালে পর্যায়ক্রমে এদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, এ হালনাগাদে ৯৫ লাখ ৯৭ হাজার ৯৫৩ জন নাগরিকের তথ্য নিবন্ধন করা হয়েছে। আর মৃত ১৪ লাখ ৬৪ হাজার ৩৫০ জনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে; যারা ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাবে।

এছাড়া হালনাগাদে ৪ লাখ ১১ হাজারের বেশি নাগরিক ঠিকানা স্থানান্তরের জন্য আবেদন করেছেন। ইসি কর্মকর্তারা বলেন, চার বছরের তথ্য একসঙ্গে করে তাদের লক্ষ্য ছিল প্রায় ১ কোটি নাগরিককে নিবন্ধন করা; এরমধ্যে ৯.৫% পূরণ হয়েছে, যা সন্তোষজনক। তবে নির্ধারিত সময়ে আরও নাগরিক নতুন করে যুক্ত হবে ২০২২ সালের মধ্যে। সেক্ষেত্রে শতভাগ টার্গেট পূরণ হবে, বলেন সহকারী সচিব মোশাররফ হোসেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিল ১০ কোটি ৪২ লাখের মতো। বর্তমানে এসব ভোটারের সঙ্গে নতুনদের যুক্ত ও মৃতদের বাদ দিয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় অন্তত সোয়া ১১ কোটি ভোটার থাকবে।