অমানবিক প্রতিযোগিতার ফল আত্মহত্যা দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম প্রকাশিত: ১:৩৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩, ২০২০ পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল না পেয়ে বা অকৃতকার্য হওয়ার কারণে সমপ্রতি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা গেছে, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট এবং বার্ষিক পরীক্ষায় কেউ ফেল, কেউ জিপিএ-৫ না পাওয়ার অভিমানে মোট নয় শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। এদের মধ্যে ছয়জন ছাত্রী, তিনজন ছাত্র। সবাই ফল প্রকাশের দিন গত মঙ্গলবার বিভিন্ন সময় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তাদের মধ্যে পাবনায় এক ছাত্রী, দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় এক ছাত্র ও এক ছাত্রী, শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলায় দুই ছাত্রী, বরিশালে এক ছাত্রী, নেত্রকোনায় এক ছাত্র, রাজবাড়ীতে এক ছাত্রী ও রাজধানীর লালবাগে একজন ছাত্র রয়েছে। শিক্ষার্থীদের এমন অকালমৃত্যু কোনভাবেই কাম্য নয়। পরীক্ষায় খারাপ করে শিশুদের আত্মহত্যার পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। মূলত কিশোর বয়সী ছেলে-মেয়েরা বেশি আবেগপ্রবণ থাকে। অল্পতেই খুশি, দুঃখ ও রাগ বোধ করা কিশোর বয়সের বৈশিষ্ট্য। পরীক্ষায় ব্যর্থতার পর পরিবারের সহযোগিতার অভাব, বরং উল্টো তাকে কটু কথা শোনানো, প্রতিবেশী, আত্মীয় ও সহপাঠীদের চাপ তাদের হতাশ হওয়ার বড় কারণ। এই শিশু-কিশোররা যখন পরীক্ষা ফেল করছে বা রেজাল্ট খারাপ হচ্ছে, বাবা-মা প্রচ- বকাঝকা করছে। অনেক সময় তারা বলেন -বাসা থেকে বের হয়ে যা বা তোর মতো সন্তান থাকার থেকে না থাকা ভালো ছিল। তারা এমনিতেই আবেগপ্রবণ। এই জিনিসগুলো তাদের আরও অনেক আবেগপ্রবণ করে ফেলে। যেহেতু এটি তাদের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের বয়স নয়, সেকারণে তার আত্মহত্যার মতো ভয়ংকর পথ বেছে নিচ্ছে। অনেক সময় একটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটলেই অন্য শিক্ষার্থী সেটা শোনে বা খবরে দেখে। তারা সেটা দেখে মোটিভেটেড হয়ে যায়। তারা ভাবে আমার মতো একজন যদি এটা করতে পারে তাহলে আমিও করতে পারি। এদিকে অনেক সময় রেগে গিয়ে বাবা-মাকে ভয় দেখানোর জন্য তারা এটা করার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু যেহেতু তাদের বয়স কম। তাদের জানার ঘাটতি আছে যে কতটুকু করলে তারা বিপদে পরবে না। তাই অনেক সময় আত্মহত্যা করতে না চাইলেও, ঘটনাটা ঘটে যায়। আমাদের দেশে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেয় ১০ থেকে বড়জোর ১৫ বছর বয়সীরা। সমাপনী পরীক্ষা দুটি হয় জাতীয় পর্যায়ে যাতে সারা দেশের এই পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। বিভিন্ন গ্রেড দিয়ে মেধা যাচাই হয় যার মধ্যে সর্বোচ্চ হচ্ছে জিপিএ-ফাইভ। এই জিপিএ-৫ এর লক্ষ্যে ধাবিত করতে শিশুদের এক ধরনের প্রতিযোগিতার মধ্যে ঠেলে দেন অভিভাবকরা। ছোট বয়সে শিশুরা খেলাধুলা করবে। তাদের ভেতরে এই বয়সে খেলাধুলার আগ্রহটাই বেশি থাকে। একসাথে এত বড় একটি পরীক্ষায় অংশ নেয়া এবং তাতে ভাল ফল করার বিষয়টি এই বয়সে অনেক বড় মানসিক চাপ। এছাড়া ভাল ফল করার ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের উপর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চাপও কাজ করে। আর সেটি ঘটে সরকারি সহায়তা পাওয়ার জন্য। স্কুলগুলোর বেশিরভাগই এমপিও ভিত্তিক। ভালো বা খারাপ রেজাল্ট এমপিও ভুক্তির একটি বড় মাপকাঠি। অন্যদিকে, গ্রেডিং পদ্ধতির মাধ্যমে মেধা যাচাই সবচাইতে বড় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। গ্রেডিং পদ্ধতির কারণে বাবা মায়েরা ছেলে-মেয়ের উপর ভালো ফলের জন্য চাপ দেয়। এখন গ্রেডিং পদ্ধতিতে পরিবর্তন সহ এখন এই পদ্ধতি নিয়ে নতুন করে চিন্তা করার সময় এসেছে। Share this:FacebookX Related posts: ‘থানা হেফাজতে আত্মহত্যার দায় পুলিশ এড়াতে পারে না’ ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে আত্মহত্যা প্রচেষ্টাকারী গৃহবধূকে হাসপাতালে পৌঁছে দিল পুলিশ স্ত্রীর স্বীকৃতি না দেয়ায় প্রেমিকের বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা একই রশিতে প্রেমিক-প্রেমিকার আত্মহত্যা ৯৯৯-এ ফোন কলে আত্মহত্যা করতে যাওয়া তরুণী উদ্ধার টঙ্গীতে মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ায় কলেজছাত্রীর আত্মহত্যা মুজিববর্ষে ঘর পাচ্ছে গৃহহীনরা কৃষকের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে SHARES Matched Content ঢাকা বিভাগ বিষয়: অমানবিকআত্মহত্যাপ্রতিযোগিতার ফল