খুলনায় সওজের জমি দখল করে চলছে ব্যবসা

প্রকাশিত: ১২:২৭ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৯, ২০২০

আতিয়ার রহমান,খুলনা : খুলনা নগরীর দৌলতপুর থানার নতুন রাস্তা এলাকায় অবস্থিত আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার। এর সামনেই খুলনা-যশোর সড়কের জমি দখল করে হাঁসের বাচ্চার সিন্ডিকেট ব্যবসায় চলছে রমরমা। স্থানীয় ক্ষমতাসীনদের নিয়ন্ত্রণে চলছে এ ব্যবসা। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সরকারি হাঁস প্রজনন খামারের।

এদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ সরকারি হাঁস প্রজনন খামার থেকে চাপ প্রয়োগ করে হাঁসের বাচ্চা ও ডিম নেওয়ার চেষ্টা করার ঘটনা ঘটেছে। যার ফলে কর্তৃপক্ষ থানায় সাধারণ ডায়রীসহ র‌্যাব-৬ এর নিকট অভিযোগও করেছিলেন অনেকে। তবে স্থানীয় সাংসদ মন্নুজান সুফিয়ান বিষয়টি সুরাহা করেন।

কর্তৃপক্ষের দাবি, সাংসদের পদক্ষেপে দমে গেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। তবে সড়ক ও জনপদের জমি দখল করে সরকারি প্রতিষ্ঠানের সামনেই হাঁসের বাচ্চার সিন্ডিকেট ব্যবসা এখনও রমরমা ভাবে চলছে। যার ফলে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা খামারীরা সরকারি প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার আগেই সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কবলে পড়ছে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, খুলনা-যশোর সড়কের নতুন রাস্তা মোড়ের খুলনা ফিলিং ষ্টেশনের উত্তর পাশ থেকে ফররুখ একাডেমী স্কুল পর্যন্ত হাঁসের বাচ্চার সিন্ডিকেট ব্যবসা চলছে। জায়গাটি একসময় পুকুর থাকলেও ক্ষমতাসীনরা সেখানে বালি ও মাটি ভরে দখল করে। এরপর সেখানে হাঁসের বাচ্চার সিন্ডিকেট ব্যবসাসহ ইট-বালির ব্যবসা পরিচালনা করছে স্থানীয় ক্ষমতাসীনরা। তবে এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়নি সওজ বিভাগ।

এদিকে সরকারি খামারে প্রতিটি হাঁসের বাচ্চা নির্ধারিত মাত্র ২০টাকা মূল্যে বিক্রি করলেও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা হাঁসের বাচ্চা বিক্রি করে ৮০-১০০ টাকায়। যার ফলে গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, নড়াইল, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, জামালপুর থেকে আসা খামারীরা সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কবলে পড়ে। সরকারি হাঁসের মান ভাল নয় এমন প্রচারণা করেই মূলত ব্যবসা পরিচালনা হয়। অভিযোগ রয়েছে, কয়েকজন ব্যবসায়ীরা গোপনে সরকারি হাঁস খামার থেকে ২০টাকা দিয়ে বাচ্চা কিনে সেটি ৮০/১০০ টাকায় বিক্রি করে। সরকারি জমি দখল করে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান স্থাপনা করে এমন সিন্ডিকেট ব্যবসায় করার পিছনে ক্ষমতাসীনদের যোগসাজশ থাকার কারণে প্রশাসন, সওজ কোন ব্যবস্থা নেয় না।

এ ব্যাপারে খুলনার আঞ্চলিক প্রজনন খামারের সহকারী পরিচালক মোশিউর রহমান বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানের সম্মুখে সওজের জায়গায় হাঁসের বাচ্চা বিক্রি করা হয়। যার ফলে খামারীরা সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এমনকি প্রতিষ্ঠানে না এসে অনেক খামারীরা সরকারি নির্ধারিত মূল্য থেকে তিন চারগুণ বেশি মূল্য দিয়ে বাচ্চা নিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সাংসদের হস্তক্ষেপের পর থেকে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আশেপাশের লোকজন আসা বন্ধ হয়ে গেছে। তবে খুব দ্রুত তিনি সওজের কর্তৃপক্ষকে সরকারি জায়গা উচ্ছেদ করে খুলনা ফিলিং ষ্টেশনের পাশ দিয়ে সরাসরি খামারে প্রবেশের জন্য রাস্তার জায়গার জন্য আবেদন করবেন। এতে অনেক খামারীরা সরাসরি খামার থেকে সরকারি নির্ধারিত মূল্যে হাঁসের বাচ্চা ও ডিম নিতে পারবেন।