গাজীপুরে কিশোরীকে গণধর্ষণ, গ্রেপ্তার ২

প্রকাশিত: ২:৩১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৯, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর এলাকায় ব্র্যাক স্কুলের ভেতর ধরে নিয়ে এক কিশোরীকে (১৩) গণধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে দুই যুবকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে কিশোরীর মা বাদী হয়ে ওই দুই যুবকের বিরুদ্ধে কাশিমপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে নওগাঁ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তাররা হলেন, নওগাঁ সদর থানার রজাকপুর এলাকার মোঃ নজরুল ইসলাম লিটনের ছেলে সম্রাট হোসেন শান্ত (২০) এবং একই থানার ভবানীপুর এলাকায় মোঃ আলীম হোসেন আলেকের ছেলে শাকিল আহম্মেদ (২২)। তারা গাজীপুরের কাশিমপুর থানাধীন তেঁতুইবাড়ী এলাকায় একটি বাসায় ভাড়ায় থেকে স্থানীয় একটি সিরামকস কারখানায় চাকুরি করেন।

ভিক্টিমের বাবা জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুর থানাধীন তেঁতুইবাড়ী এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে আচার বিক্রি করেন। তাদের গ্রামের বাড়ি নওগাঁ। তার স্ত্রী ও ভিক্টিমের মা স্থানীয় একটি ক্লিনিকে আয়ার কাজ করেন। তাদের মেয়ে সেখানে একটি মাদ্রাসায় হেফজ শাখার ছাত্রী।

ভিক্টিমের বাবা আরো জানান, বুধবার সকালে মেয়েকে বাসায় একা রেখে তারা স্বামী-স্ত্রী কাজের উদ্দেশে বের হয়ে যান। বুধবার দুপুরে তাদের মেয়ে প্রতিবেশী এক শিশুকে খুঁজতে বাসা থেকে বের হয়। পথে মোঃ সম্রাট হোসেন ওরফে শান্ত (২০) ভিক্টিমকে পেছন থেকে ডাকতে থাকে যে ওই শিশুটি তার কাছে আছে। কিন্তু ভিক্টিম মেয়ে শান্ত’র ডাকে সাড়া না দিয়ে দৌড়ে বাসায় ফেরার চেষ্টা করে। এসময় সম্রাট হোসেন ও শাকিল আহম্মেদ তার পিছু দৌঁড়ে যায় এবং তাকে ধরেজোর করে পাশের একটি টিনশেডের ব্র্যাক স্কুলের ভেতর নিয়ে যায়। পরে পালাক্রমে সম্রাট হোসেন ও শাকিল আহম্মেদ তার মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এসময় তার চিৎকারে প্রতিবেশী কয়েকজন নারী তাকে উদ্ধার করে। সন্ধ্যায় ওই কিশোরীর মা ও বাবা কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরে ঘটনাটি জানতে পারে। বৃহস্পতিবার সকালে কিশোরীর মা বাদী হয়ে কাশিমপুর থানায় সম্রাট হোসেন শান্ত ও শাকিল আহম্মেদকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।

কিশোরীর মা জানান, রাতে বাসায় কাজ শেষে বাড়ি ফিরলে ঘটনাটা জানতে পারেন সকালে থানায় মামলা করা হয়েছে। ধর্ষকরা স্থানীয় একটি সিরামিকস কারখানায় চাকুরি করে এবং তেতইবাড়ি এলাকায় নুরু দেওয়ানের বাড়ি ভাড়া থাকে। তিনি ওই ধর্ষকদের ফাঁসি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ভিক্টিমের বাবা-মা বলেন, আমরা গরীব মানুষ, আমাদেরও একটা মান সম্মান আছে। আমরা এলাকায় এখন কিভাবে থাকব। আমরা তাদের কঠিণ শাস্তি দাবি করছি।

কাশিমপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, কিশোরীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (ডিবি) জাকির হাসান জানান, মামলা দায়েরের পর থেকে পুলিশ আসামীদের গ্রেপ্তার সুদূর নওগাঁয় অভিযান চালায়। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে নওগাঁ থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক মাজহারুল হক জানান, ভিক্টিমের শরীরে ধর্ষণের প্রাথমিক সিমটম পাওয়া গেছে। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার পর চূড়ান্ত ফল বলা যাবে।