হিউম্যান মিল্ক ব্যাংক চালুর কার্যক্রম স্থগিত

প্রকাশিত: ৭:২২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৯

নিউজ ডেস্কঃ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধোধন হওয়ার আগেই হিউম্যান মিল্ক ব্যাংক চালুর কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। হিউম্যান মিল্ক ব্যাংক চালু করার উদ্যোগ নেয় ঢাকার মাতুয়াইলে অবস্থিত ইন্সিটটিউট অব চাইল্ড অ্যান্ড মাদার হেলথ।এ নিয়ে আমার সংবাদসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর থেকেই অনেকেই এই প্রক্রিয়ার সমালোচনা করেন। হালাল-হারামের বিষয় জড়িয়ে আছে জানিয়ে উদ্যোগের বিরোধিতায় নামেন ওলামাদের একটি অংশ।এতে আইনগত ও ধর্মীয় সমস্যা তৈরি হবে দাবি করে উকিল নোটিসও পাঠানো হয়।তারা বলছেন, ইসলাম ধর্ম মতে, কোনো শিশু কোনো নারীর দুধ পান করলে ওই নারী ওই শিশুর দুধমাতা হয়ে যায়। দুধ পানকারী সন্তানরা ওই নারীর সন্তান হিসেবে গণ্য হয়।বাংলাদেশে ওই ‘মিল্ক ব্যাংক’ স্থাপনের ফলে যারা একই মায়ের দুধ পান করবে তারা প্রত্যেকে ভাই-বোন হয়ে যাবে। ভবিষ্যতে ওই সব ছেলে-মেয়ের মধ্যে বিয়ে হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু ইসলামে ভাই-বোনের মধ্যে বিয়ে নিষিদ্ধ।

তবে, অবস্থিত ইন্সিটটিউট অব চাইল্ড অ্যান্ড মাদার হেলথ কর্তৃপক্ষ দাবী করছে, তাদের এই উদ্যোগ এটি ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক।তবে যেহেতু সমালোচনা হচ্ছে, এছাড়া একজন উকিল নোটিসও পাঠিয়েছেন তাই এই ব্যাংক চালুর প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।একই সাথে ইন্সিটটিউট অব চাইল্ড অ্যান্ড মাদার হেলথ কর্তৃপক্ষ বলছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আলেমা ওলামাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন।যদি সিদ্ধান্ত হয় এটি ইসলামি শরিয়াহ সম্মত, তাহলে এই ব্যাংক চালু করা হবে। যদি সিদ্ধান্ত হয় এটি শরিয়াহ সম্মত নয় তাহলে এটি চালু করা হবে না।কর্তৃপক্ষ বলছে উদ্যোগটি ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে করা হয়নি। করা হয়েছে সেবার জন্য। আর এখান থেকে কোনো টাকা পয়সা নেয়া হবে না।হিউম্যান মিল্ক ব্যাংকের’ সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. মজিবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ২০১৭ সালে একটি গোলটেবিল আলোচনায় ‘হিউম্যান মিল্ক ব্যাংক’ চালুর ভাবনা মাথায় আসে তার। সেখানে নবজাতক মৃত্যুর বিভিন্ন কারণ নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে বলা হয়, নবজাতক মৃত্যুর হার কমাতে হলে মায়ের দুধ পান নিশ্চিত করতে হবে।

এটা নিশ্চিত করতে গেলে যে বাচ্চাগুলোর মা মারা যায়, যে বাচ্চার মা নাই আইসিইউতে ক্রিটিক্যালি সিক, যারা কোনো ধরনের খাবার খায় না, তাদের জন্য কী ব্যবস্থা করা যায়। সেখানেই একটা প্রস্তাব আসে যে বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোয় মিল্ক ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা যায় কি না।অধ্যাপক মজিবুর বলেন, মাথায় ভাবনা আসার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঁচশর বেশি মিল্ক ব্যাংকের খোঁজ পান তিনি। এর মধ্যে মুসলিম দেশ কুয়েত, মালয়েশিয়া, ইরাক, ইরান ও পাকিস্তানও রয়েছে। তখন মনে হয়, ইরান, কুয়েত, মালয়েশিয়া যদি করতে পারে, তাহলে আমরাও মিল্ক ব্যাংক করতে পারি।তিনি বলেন, আমার এনআইসিইউতে প্রতি বছর অনেক বাচ্চা আসে যাদের মা নাই। গত দুই বছরে ২৫টার মতো বাচ্চা এসেছে যাদের মা নাই। এছাড়া দত্তক বাচ্চারাও আছে যাদের মায়ের দুধ প্রয়োজন।

শুধু বুকের দুধের অভাবে যেসব বাচ্চারা অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে, তাদের রক্ষা করা যাচ্ছে না। ইসলামিক শরীয়া অনুযায়ী সবকিছু ঠিক রেখে যদি তাদের জন্য মিল্ক ব্যাংক করা যায়, তাহলে সামাজিকভাবে তাদের উপকারে আসবে।আরো পড়ুন-মায়ের বুকের দুধ সংরক্ষণে চালু হলো ‘মিল্ক ব্যাংক।

পা দিয়ে লিখে গোল্ডেন জিপিত্র-৫ পেয়েছে মানিক