কাপ্তাইয়ের পর রাঙ্গামাটি মৎস্য ব্যবসায়ীদের থেকে চাঁদা দাবি, বিপাকে মৎস্যজীবীরা

প্রকাশিত: ৭:৪৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলা মৎস্য ব্যবসায়ীদের থেকে চাঁদা আদায়ের পর এবার রাঙ্গামাটি মৎস্য ব্যবসায়ীদের থেকে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা চাঁদা দাবি করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর চাঁদা দিতে গড়িমশি করায় গত দুই-তিনদিন ধরে জেলা সদরের কাপ্তাই হ্রদের আশেপাশে এলাকা মগবান ইউনিয়ন, বড়াদম, কেইল্যামুড়া, বালুখালী ইউনিয়ন এলাকায় মৎস্য ব্যবসায়ী জেলেদের জাল মারা মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকতে নিষেধ করেছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এতে বিপাকে পড়েছেন কাপ্তাই হ্রদ সংশ্লিষ্ট খুচরা ও পাইকারি মৎস্য ব্যবসায়ী, মাঝি ও শ্রমিকসহ হাজারও মানুষ।

শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এমন তথ্য নিশ্চিত করে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) রাঙ্গামাটি শাখার ব্যবস্থাপক লে. কর্নেল এম. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা রাঙ্গামাটি মৎস্য ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে চাঁদার দাবী করেছে বলে আমি অবগত হয়েছি। বিষয়টির ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করা হয়েছে। আগামীকালের মধ্যে একটি সমাধানের পথ খুঁজে নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে দুই-তিনদিন ধরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা পড়েছে চরম বিপাকে। তাদের আয়ের চাকা বন্ধ হয়ে গেছে। কেননা গত ১০আগষ্ট কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় জেলা প্রশাসন। মাত্র এক মাসের ব্যবধানে আয়ের চাকা সচল করার আগে সন্ত্রাসীদের একের পর এক এহেন কার্যক্রমে ক্ষোভ প্রকাশ করছে ব্যবসায়ীরা।

সুত্রে জানা গেছে, রাঙ্গামাটি জেলা সদরের বালুখালী, বড়াদম, মগবান, কেইল্যামুড়া এইসব এলাকায় স্থানীয় আঞ্চলিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর অবস্থান রয়েছে। মূলত এইসব সংগঠনের পক্ষ থেকে চাঁদা দাবি করা হয়েছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন।

এদিকে, রাঙ্গামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লি: এর সাধারণ সম্পাদক উদয়ন বড়ুয়া বলেন, এশিয়ার বৃহত্তম কাপ্তাই হ্রদে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক মে মাস হতে জুলাই এই তিন মাস মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকার পর গত ১০ আগষ্ট থেকে পুরোদমে নামে রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই হ্রদের মাছ শিকারে মৎস্য ব্যবসায়ীরা। আর হ্রদে মাছ ধরা শুরু হলো মাত্র একমাস। আর ব্যবসা করার আগে সন্ত্রাসীদের চাঁদার দাবি মিটানো সত্যিই খুব কষ্টের। একদিকে করোনা পরিস্থিতির কারণে মৎস্য ব্যবসার মন্দাভাব চলায় দাবিকৃত চাঁদা যেন এখন আবার মরার উপর খাড়ার ঘাঁয়ে পরিণত হয়েছে।

কাপ্তাইয়ের মাছ ঢাকা, যাত্রাবাড়ি, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানী করা হয়ে থাকে। আর কাপ্তাই হ্রদে জাল থেকে মাছ সংগ্রহ থেকে শুরু করে বিপনন পর্যন্ত হাজারো লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এই মুহুর্তে চাঁদার জন্য কাপ্তাই লেকে যদি মাছ আহরণ চিরতরে বন্ধ হয় তাহলে দেশের আমিষের চাহিদায় বড় প্রভাব পড়বে।

উল্লেখ্য, আঞ্চলিক দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা কাপ্তাই উপজেলায় দাবীকৃত লক্ষ টাকা চাঁদা পরিশোধ না করায় বৃহস্পতিবার (২৭ আগষ্ট) হতে মাছ আহরণ বন্ধ করার নির্দেশ প্রদান করে। পরবর্তীতে সমঝোতার ভিত্তিতে আবারো মাছ আহরণের অনুমতি সাপেক্ষে জেলেরা মাঝ ধরতে শুরু করে।