অগ্নিকাণ্ড ২০১৯: কেঁদেছে পুরো বাংলাদেশ!

প্রকাশিত: ১২:২১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৯

নিউজ ডেস্কঃ আজই শেষ হচ্ছে ২০১৯। তবে বছরটি শেষ হলেও ভুলা যাবে না খুব সহজে। কারণ এই বছরের পুরোটা সময় কেঁদেছে বাংলাদেশ। এ বছর চকবাজার, বনানী ট্র্যাজেডি ছাড়াও রাজধানীসহ সারাদেশে ব্যাপক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, এই বছর (২০১৯) বিভিন্ন অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন ২১৩৮ জন। আহত হয়েছেন ১৪,৯৩২ জন। অথচ ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে দেশব্যাপী অগ্নিকাণ্ডে মারা গেছেন মোট ১৪৯০ জন। অর্থাৎ এ বছরে আগুনে নিহতের সংখ্যা গেল দশ বছরের দ্বিগুণ।
চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ড
এ বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। কয়েকটি ভবনে লাগা আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে অঙ্গার হয়েছে ৭৮ তাজা প্রাণ। এছাড়া অগ্নিদগ্ধ ও আহত অন্তত ৬০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। অনেকেরই পরিচয় জানতে হয়েছে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে। ওই ঘটনার তদন্ত আজও শেষ হয়নি।সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আগুনরাজধানীর শেরে বাংলা নগরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফেব্রুয়ারি মাসে আগুনের ঘটনা ঘটে। হাসপাতালের নতুন ভবনের গুদামঘর (স্টোররুম) থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রোগী স্থানান্তরের সময় এক শিশুর মৃত্যু হয়। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিট। এ সময় আইসিইউ, সিসিইউসহ হাসপাতালে ভর্তি এক হাজারেরও বেশি রোগীকে দ্রুত অন্য হাসপাতালে সরিয়ে নেয়া হয়।বনানীতে এফআর টাওয়ারে আগুন

রাজধানীর বনানীর এফ আর (ফারুক রূপায়ন) টাওয়ারে চলতি বছরের ২৮ মার্চ ভয়াবহ আগুন লাগে। এই ঘটনায় স্তম্ভিত ও হতবাক হয় দেশবাসী। এতে ২৫ জনের করুণ মৃত্যু হয়। আহত হন প্রায় ১০০ জন।
ডিএনসিসি মার্কেটে আগুন
রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ের ২২ তলা বিশিষ্ট ভবন এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের শোক ভুলতে না ভুলতেই ৩০ মার্চ আবারও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে গুলশান-১ এর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মার্কেটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট। একইসঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দিয়েছিল সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী।
কেরানীগঞ্জে প্লাস্টিক কারখানায় আগুন রাজধানীর কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় ‘প্রাইম পেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের’ কারখানা। বিশাল জমির ওপর গড়ে ওঠা এই কারখানায় প্লাস্টিকের ওয়ানটাইম প্লেট ও কাপ তৈরির কাজে কর্মরত ছিল অন্তত ১৫০ জনের অধিক শ্রমিক। গত ১১ ডিসেম্বর বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটের দিকে কারখানার গ্যাস চেম্বারে লিকেজ থেকে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে ঘটনাস্থলেই মাহবুব নামে একজন মারা যান। এছাড়া, কারখানার দগ্ধ ৩১ জন শ্রমিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিট ও শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। পরে হাসপাতালে ২১ জন মারা যান। ঘটনার পর থেকে কারখানার মালিক নজরুল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।
গাজীপুরে ফ্যান কারখানায় আগুনগাজীপুর সদরের কেশোরিতা এলাকায় গত ১৫ ডিসেম্বর লাক্সারি ফ্যান কোম্পানি লিমিটেডের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কারখানার ১০ শ্রমিকের মৃত্যু হয়। আহত হন ১৫ জন।মিরপুরে বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডরাজধানীর মিরপুর কালশীর একটি বস্তিতে ২৬ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট সেখানে কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে।এই ভয়াবহ আগুন কেড়ে নেয় বাউনিয়া বাঁধ বস্তির ৪ শতাধিক মানুষের সহায়-সম্বল। তাদের গায়ের কাপড়টুকু ছাড়া বাকি সব শীতের রাতের আগুনে ভস্ম হয়ে যায়। বয়স্ক আর শিশুদের নিয়ে তাদের অস্থায়ী আশ্রয় হয় স্থানীয় আনন্দ স্কুলে।

পিইসি-জেএসসি-জেডিসির ফলাফল প্রধানমন্ত্রীর হাতে