শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত রাহাত খান

প্রকাশিত: ১০:৫১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৯, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শনিবার (২৯ আগস্ট) চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য কথাসাহিত্যিক রাহাত খান।
এর আগে শনিবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে তার প্রথম জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজা শেষে তার মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানান সাংবাদিক, লেখক-সাহিত্যিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাহিত্যপ্রেমী ভক্ত-অনুরাগীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

এরপর তার সর্বশেষ কর্মস্থল প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার কার্যালয়ের সামনে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের পক্ষ থেকে তার মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এরপর প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার পরিবারের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বাদ জোহর তৃতীয় জানাজা শেষে তার মরদেহ দাফন করা হয়।

এর আগে প্রেস ক্লাবে প্রথম জানাজা শেষে তার মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার পক্ষ থেকে প্রধান সমন্বয়ক এস এম মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন রাহাত খানের স্ত্রী অপর্ণা খান, ছেলে ঋদ্ধি খান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন সাহা, বিএফইউজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া কাজল, বিএফইউজের মহাসচিব শাবান মাহমুদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব আবদুল জলিল ভূঁইয়া, প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার সাংবাদিক ও সংবাদকর্মী, মরহুমের পরিবারের সদস্য ও অন্যান্য গণমাধ্যমের কর্মী এবং সাহিত্যপ্রেমী ভক্ত-অনুরাগী।

রাহাত খানের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তিনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। একুশে পদকপ্রাপ্ত একজন লেখক। প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার একজন মানুষ। আজীবন বঙ্গবন্ধুর পক্ষে কথা বলেছেন ও লিখেছেন। তিনি শুধু সাহিত্যিক ছিলেন তা নয়, তিনি একজন প্রখ্যাত সাংবাদিকও ছিলেন। এ বরেণ্য সাংবাদিক সংবাদপত্র জগৎকে সমৃদ্ধ করে গেছেন। আমরা তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।’

রাহাত খানের স্ত্রী অপর্ণা খান বলেন, ‘উনি একজন ভালো মানুষ ছিলেন। আপনারা তার জন্য দোয়া করবেন। তাকে যেন আল্লাহ বেহেশত নসিব করেন।’

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী বলেন, রাহাত খান এক অপূর্ব ও বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী ছিলেন। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে প্রথম যে আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন হয় তার কার্যনির্বাহী সাধারণ সম্পাদক ছিলেন রাহাত খান। সেই সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এসেছিলেন প্রধান অতিথি হয়ে। এসেছিলেন জসীমউদ্দীন ও শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন। আমাদের গর্ব এটাই, রাহাত ভাই সেই বয়সে আমাদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন সাহিত্যে। আমরা তার মৃত্যুতে শোকাহত। তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম জানান, তিনি চলে যাওয়ায় তার স্থান (সাহিত্য ও সাংবাদিকতা) শূন্য হয়ে গেছে। তার অভাব অপূরণীয়। বাংলার মানুষ তার সৃষ্টিতে তাকে আজীবন স্মরণে রাখবে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে আজ আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি। তার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। তিনি একাধারে সাংবাদিক এবং সাহিত্যিক ছিলেন। এই বরণ্য সাংবাদিকের সঙ্গে চলার পথে তার মধ্যে কোনো অহংকার দেখিনি। আমরা তাকে খুব মিস করব।’