কৃষিতে এগিয়ে থাকা দেশকে এখন শিল্প বিপ্লবের দিকে নিয়ে যেতে হবে: রেলমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৮:২৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৭, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : রেলপথ মন্ত্রী আডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, কৃষিতে এগিয়ে থাকা দেশকে এখন শিল্প বিপ্লবের দিকে নিয়ে যেতে সরকার কাজ করছে। এজন্য সারাদেশে ১০০ টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে দেবীগঞ্জের এক অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু হয়েছে। এতে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্যের চাহিদাও বাড়বে। ফলে স্থানীয় অর্থনীতির চাকা সবসময় সচল থাকবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সদ্য চুক্তি সম্পাদিত দেবীগঞ্জ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন শেষে দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও সুধীজনদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার কিন্তু তাকে হত্যার পর সেই স্বপ্ন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে তাঁরই কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমরা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই দেশ একদিন বিশ্বের বুকে মর্যাদার আসনে পৌঁছে যাবে।

তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মকে কেবল চাকরির পেছনে ছোটা উচিত নয়, পরিবর্তে তারা উদ্যোগ নিতে পারে। তিনি আরও যোগ করে বলেন, “আমাদের এদিকে নজর রেখে কাজ করছে সরকার। কোনও সন্দেহ নেই যে আমাদের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর, তবে একই সাথে আমাদের শিল্পায়ন প্রয়োজন। কারণ, কোনও দেশ শিল্পায়ন ছাড়া অগ্রগতি করতে পারে না। অবশ্য দেশের জমির পরিমাণ কম হলেও সচ্ছল জনগণের খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আবাদযোগ্য জমি বাঁচানোর প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।

তিনি বলেন, সরকার দেশে ২০৩০ সালের মধ্যে সারা দেশে ১০০ টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে। এসব অঞ্চলে থেকে ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি হবে। দেবীগঞ্জের অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১০ হাজার দক্ষ অদক্ষ নারী পুরুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে স্থাপিত সব শ্রেণির (এ/বি/সি) কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য রপ্তানিও হবে। এতে পঞ্চগড়ে উৎপাদিত কৃষি পণ্যের ব্যবহার নিশ্চিত হবে। কৃষকের পণ্যের নায্যমূল্য নিশ্চিত হবে। দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশব্যাপী শিল্পের বিকাশের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন সরকার। অনগ্রসর অঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় অর্থনৈতিক অঞ্চল তথা শিল্পনগর গড়ে তুলে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে সরকার কাজ করছে। দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির গতি আরও গতিময় করতে আমাদের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলিতে বিনিযোগ করতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের, বিশেষত যুবকদেরকে উৎসাহিত করার কাজ করছে বেজা। বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ স্থানান্তরের যে প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে, এর পরিপ্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে কর্মকৌশল ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য কাজ করছে সরকার ও বেজা। দেবীগঞ্জে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রত্যয় হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুল মান্নান, দেবীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক চিশতি ও দেবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী বক্তব্য দেন।

গত ২৪ আগস্ট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে দেবীগঞ্জ উপজেলার প্রধানপুর, দেবীডুবা ও দাড়ারহাট মৌজার ২১৭.৭৮ একর অকৃষি খাস জমি সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন প্রতিকীমূল্যে বেজাকে হস্তান্তর করেন। বেজার পক্ষে সহকারী ব্যবস্থাপক একেএম আনোয়ার দলিল গ্রহণ করেন।