ভাসমান বেডে আমন বীজ তলা তৈরি করেছে কৃষকরা

প্রকাশিত: ৮:০০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : ডুমুরিয়ায় বীজতলা আমন ধানের ভাসমান বীজতলা করেছেন রবিন্দ্রনাথ মল্লিক। বিকাশ চন্দ্র সরকার পিতা অভিমান্য সরকার। গ্রাম চহেড় তারা এই ভাসমান বীজতলা দেখে বন্যা কবলিত এলাকার লোকজনের মধ্যে সাড়া পড়েছে।
ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা ইউনিয়নের মিকশিমিল ব্লাকে‌, চহেড়া গ্রামের মো. আরশাদ আলি সরদার পিতা আব্দুল করিম সরদারসহ ১০জন কৃষকরা আমন ধানের চারা পানির উপরে ভাসমান বেডে তৈরি করে আমন ধানের ‌বীজ তলা বানিয়েছেন। সোমবার সরেজমিন গেলে কৃষকরা তুলে ধরেন তারা এই ভাসমান বীজতলার সফতার কথা।

কৃষকরা জানান, তাদের এলাকায় প্রতি বছর বন্যায় আমন ধানের বীজতলা পানিতে ডুবে যায়। এতে বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়। বন্যার কারণে অনেক কৃষকরা আমন ধানের চারার অভাবে সময় মতো ক্ষেতে চারা রোপন করতে পারেন না। অনেকের ক্ষেত পড়ে থাকে বিরান ভূমি। প্রায় এক মাস আগে কৃষকরা ।

ডুমুরিয়া উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমানের পরামর্শে আমন ধানের ভাসমান বীজতলা তৈরি করেন। এক একর জমির জন্যে ৮ কেজি হাইব্রীড জাতের ধানের চারার জন্যে পানির ওপর কৃষকরা ১০টি বেড তৈরি করেন। এতে তার খরচ হয় প্রায় ৫ হাজার টাকা।

তিনি বলেন, ভাসমান বীজতলায় আমন ধানের চারা বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাবে। এই ভাসমান আমন ধানের বীজতলা দেখে তার এলাকার লোকজনও আগ্রহ প্রকাশ করছেন।

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। এতে আমন ধানের বীজতলার সংকট দেখা দেয়। বন্যায় এই ভাসমান এই বীজতলার কোনো ক্ষতি হবে না। এই জন্য অনেকেই আগামীতে ভাসমান বীজতলা করবে।

তিনি আরো বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় ভাসমান বীজতলা করার পরামর্শ দেয়া হয়। যাতে বীজতলার অভাবে আমন ধান চাষের বিঘ্ন না ঘটে। এতে ব্যয় একটু বেশি হলেও আমন ধানের চারার অভাব পড়বে না।

ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ শাহনাজ বেগম বলেন, আমি ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি বিষয়ক সভা ও মিটিংয়ে গেলে বলি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন কৃষি ও শিল্প পরস্পর পরস্পরের পরিপূরক। কৃষি শিল্পের কাঁচামালের যোগান দেয়। কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য কৃষি পণ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে তুলতে হবে।

তিনি আরো বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশ আছে যেখানে একটা গাছ লাগাতে প্রচুর খরচ ও পরিশ্রম করতে হয়। আর এদেশের মাটিতে ১টি বীজ পড়লে তা আপনা-আপনিই গাছে পরিণত হয়। এজন্য আমাদের ভূমির সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে হবে এবং প্রতি ইঞ্চি জমিকে কাজে লাগাতে হবে।

তিনি আরো বলেন, এখন সব মৌসুমেই সব শাকসবজি ফলমূল পাওয়া যাচ্ছে যা কৃষি অগ্রগতির পরিচায়ক। এছাড়া কৃষি কৌশলে আধুনিকতা, সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা, সেচের এলাকা বৃদ্ধি, কৃষি খাতে সৌরচালিত সেচ পাম্পের প্রসারে বিভিন্ন পদক্ষেপে কথাও তুলে ধরেন। তিনি কৃষি পণ্যের বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণে কৃষি মন্ত্রণালয়কে আরো কার্যকরী ভূমিকা রাখার পরামর্শ প্রদান করেন।

খুলনা জেলার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. হাফিজুর রহমান জানান, ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. মোছাদ্দেক হোসেনকে আমি জানিয়েছি ডুমুরিয়া উপজেলায় বন্য কবলিত এলাকায় ভাসবেড তৈরি করে আমন‌ ধানের চারা তৈরি করতে।