স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হলেন সেব্রিনা ফ্লোরা

প্রকাশিত: ১১:০৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৩, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শারমিন আক্তার জাহান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ নিয়োগের কথা জানানো হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী ২০ আগস্ট থেকে এ আদেশ কার্যকর হবে।

মহামারির এই সময়ে এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর নিয়ে নানা সমালোচনার ভেতরে নতুন অতিরিক্ত মহাপরিচালক হিসেবে তার কাছে প্রত্যাশা কী? জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা অভিজ্ঞ একজন ব্যক্তি। নিজের দায়িত্ব তিনি ভালোভাবে পালন করবেন এটাই প্রত্যাশা। আইইডিসিআরকে তিনি খুব ভালোভাবে এতদিন নেতৃত্ব দিয়েছেন। করোনার এই সময়ে শুরু থেকে তিনি তার প্রতিষ্ঠানকে যে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছেন, সবকিছু তিনি যেভাবে হ্যান্ডেল করেছেন সেটা প্রশংসার যোগ্য। তার প্রতি যে দায়িত্ব অর্পণ করা হলো অভিজ্ঞ হিসেবে পরিকল্পনা করে সেটা তিনি ভালোভাবে করবেন বলে মনে করি।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নতুন মহাপরিচালক এসেছেন, আরও অনেকেই আসবেন। তারা সবকিছুর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবেন এটাই আশা করছি।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) হিসেবে অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা বর্তমানে কর্মরত আছেন। আগামী ১৮ আগস্ট পর্যন্ত তার চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি অবসরে যাবেন।

রোগতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ডা. সেব্রিনা ১৯৮৩ সালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে এমবিবিএস সমাপ্ত করে আরও কিছু প্রতিষ্ঠানেও কাজ করেছেন তিনি। তিনি জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম) থেকে রোগতত্ত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। সেখানে পরে তিনি সহকারী অধ্যাপক হিসেবেও কাজ করেছেন। তিন বছর কাজ করেছেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলে (বিএমআরসি) সহকারী পরিচালক হিসেবে। পরে তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নেন। তিনি ফাউন্ডেশন ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অব ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের ফেলো।

অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা ২০১৬ সালে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। নিয়োগ পাওয়ার পর তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মহামারি সৃষ্টিকারী ভাইরাস ও রোগ বিস্তার প্রতিরোধে বিভিন্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেন ও গবেষণা করেন।

তার নেতৃত্বেই ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জিকা ভাইরাস, মধ্যপ্রাচ্যের শ্বাসযন্ত্রের সিন্ড্রোম সম্পর্কিত ভাইরাস এবং ২০১৯-২০ সালে করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারি প্রতিরোধে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তার দল ২০১৭ সালে বাংলাদেশে চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে কাজ করে। গত বছরের শেষে চীনের উহানে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হলে দেশেও আইইডিসিআর করোনা নিয়ে কাজ শুরু করে। তার নেতৃত্বেই করোনা বিষয়ক সংবাদ সম্মেলন প্রতিদিন দুপুর সাড়ে ১২টায় আইইডিসিআর ভবনে অনুষ্ঠিত হতে থাকে। সুন্দর বাচনভঙ্গিতে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দেশের মানুষসহ গণমাধ্যমের নজর কাড়েন তিনি।