রাজশাহীর সিটি হাটে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

প্রকাশিত: ৮:৫০ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৪, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : করোনা ভাইরাসের কারণে পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার নির্দেশনা থাকলেও রাজশাহীর সিটি হাটে মানা হচ্ছে না কোনো স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব। এমনকি কেউ পরছে না মুখের মাস্ক।

রাজশাহী অঞ্চলের সর্ববৃহৎ কোরবানির এই পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে ঝুঁকিতে পড়ছেন হাটে আগত হাজার হাজার ক্রেতা ও বিক্রেতারা। তার ওপর হাঁটু পর্যন্ত কাদা-পানি। এরই মাঝে চলছে বেচাকেনা। তবে এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি হাট ইজারাদারকে। বরং এ বিষয়ে উদাসীনই মনে হয়েছে তাকে। অবশ্য ক্রেতা কম হওয়ায় পশুর দামও বেশ কম রয়েছে।

শুক্রবার সরেজমিনে রাজশাহীর সিটি হাটে গিয়ে দেখা গেছে, হাটজুড়ে কাঁদাপানিতে ছয়লাভ সিটি হাট। কোথাও কোথাও হাঁটু পর্যন্ত দেবে যাচ্ছে পা। ফলে পোশাক নষ্টের পাশাপাশি অনেকেই পিছলে পড়েও আহত হচ্ছেন। এরই মাঝে গরু মহিষ আর মানুষে গাদাগাদি করে চলছে কেনাবেচা।

হাটে কেউই মাস্ক পড়ছেন না। বিক্রেতা কারো মুখেই মাস্ক নেই। শতকরাা ১০ জন ক্রেতা মাস্ক পড়লেও তার মধ্যে প্রায় ৮ জন মাস্ক থুতনিতে পড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সাথে চলছে সমানে প্রকাশ্যে লোকালয়ে ধুমপান ও পান খাওয়ার হিড়িক। সেই সাথে কাঁদা পানির মধ্যেই হাটের মধ্যেই চলছে গরুর মাংসের কালাভুনা খাওয়ার ধুম।

মাস্ক না পড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে অনেক বিক্রেতাই বলেন, গরুর হাটে গরমের মধ্যে মাস্ক পড়ে থাকা যায় না। মুখ ঘেমে যায়। কথাও বলতে কষ্ট হয়। তাই তারা মাস্ক পড়ছেন না। এবিষয়ে ক্রেতারাও একই ধরনের কথা বলছেন।

পশুহাটে প্রবেশমুখেই বাছুরহাটা রাস্তার উপরেই বসেছে। বিক্রেতারা বাছুর নিয়ে দাঁড়িয়েছেন হাটুপানির উপরে। ক্রেতারা এপাশ দিয়েই বড় বড় গরু মহিষ নিয়ে ছুটে চলেছেন। গবাদিপশু কারো গায়ে উঠলো, কিংবা কেউ ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেলো সেদিকে কারোই হুশ নেই। এরপরই গরুর হাট । হাজার হাজার গরু। কাঁদা-পানির অসংখ্য ধাপ দেয়ার পর মহিষহাট। সেখানে ময়লা আবর্জনার পাহাড় সমান স্তুপ। আছে হাসপাতালের বর্জ্য থেকে গোটা নগরীর বর্জ্য। এরমাঝেই মানুষের সরব উপস্থিতি আর ভোগান্তি।

সিটি হাট ইজারাদার আতিকুর রহমান কালু বলেন, আমরা সবাইকে মাস্ক পরার কথা বলি কিন্তু কেউ শুনে না। তখন আমাদের কিছু করার থাকে না।

এবিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী সিটি করর্পোরেশনের (রাসিক) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আঞ্জুমান আরা বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য এখন থেকে হাটের দিন লোক পাঠাবো। তবে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রেখেছি।

এদিকে গোটা হাট কাঁদা পানিতে তলিয়ে থাকলেও সিটি হাট থেকে বছরে কোটি টাকার উপরে রাজস্ব আসে। কিন্তু হাটের কোন উন্নয়ন হয়নি। সিটি হাটেই ফেলা হয় গোটা শহরের ময়লা আবর্জনা থেকে শুরু করে হাসপাতালের বর্জ্যও।

এবিষয়ে জানতে রাকিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দীন বলেন, ‘হাটে হাঁটু পর্যন্ত কাদা। আমি নিজেই গরু কিনতে গিয়ে দেখেছি। এবিষয়টি কেনো সংস্কারের তালিকায় আসছে না, তা জানার জন্য মেয়র স্যার ঠিকাদারকে ডেকেছিলেন।’