নাগরপুরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম প্রকাশিত: ৯:৫২ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৯, ২০২০ নিজস্ব প্রতিবেদক : দ্বিতীয় দফায় যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীতে পানি বাড়ায় টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। নাগরপুর সরকারি কলেজ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নাগরপুর-চৌহালী সড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বন্যার পানি উঠায় চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় গবাদি পশু নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটছেন শত শত মানুষ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ সহায়তা দিলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। উপজেলার নাগরপুর, সলিমাবাদ, দপ্তিয়র, গয়হাটা, ভারড়া, মোকনা, পাকুটিয়া, ধুবড়িয়া, সহবতপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার বসতঘরে পানি ওঠায় ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিচ্ছে শত শত পরিবার। এছাড়া, উপজেলার যমুনা ও ধলেশ্বরী নদী সংলগ্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। কোন কোন এলাকার কাঁচা-পাকা রাস্তা ডুবে গিয়ে আশপাশের এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জানা গেছে, গত ৩ দিন ধরে যমুনায় পানি বাড়ায় ভারড়া, গয়হাটা, সলিমাবাদ ও দপ্তিয়র এলাকার হাজার হাজার মানুষের ঘরে পানি উঠেছে। বসতঘরের পাশাপাশি ডুবে গেছে টয়লেট, নলকূপ, রান্নাঘর, গোয়ালঘর। ফলে রান্না করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। সংকট দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির। অনেকে ঘরের ভেতর মাচা পেতে হাঁস-মুরগি ও গবাদিপশু নিয়ে থাকছেন। আবার অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে ছুটছেন নিরাপদ স্থানে। বন্যার পানির স্রোতে চৌহালী-আরিচা সড়কের উপজেলার সলিমাবাদ ইউনিয়নের তেবাড়িয়ায় বেইলী ব্রিজ ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া, নাগরপুর শাহাজানী সড়কের বনগ্রামে পাকা রাস্তায় পানি উঠে পার্শ্ববর্তী চৌহালী উপজেলার সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসনের সূত্রে জানা গেছে, গত দুই দিনে জেলার নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। রোববার সকাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত দুদিনে নাগরপুর উপজেলার যমুনা নদী বেষ্টিত ৪টি ইউনিয়নে বন্যার পানি বেড়েছে। এদিকে, যমুনা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে ভাঙনও। পানি উন্নয়ন বোর্ড সংশ্লিষ্ট এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। বন্যা পরিস্থিতি দেখতে উপজেলা প্রশাসনের টিম শনিবার সারা দিন উপজেলার বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছে। এ সময় পানিবন্দি মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। সলিমাবাদ ইউনিয়নের পাইকশা এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, গত কয়েক দিন ধরে প্রচুর পানি বেড়েছে। এবার ঘরের চাল ছুঁইছুঁই করছে পানি। এ এলাকার অনেকেই ঘরবাড়ি ফেলে আশ্রয়কেন্দ্র ও নিরাপদ স্থানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। এতো পানি গতবারেও হয়নি। গরু-ছাগল নিয়ে চরম দুর্ভোগে দিন কাটছে তাদের। সহবতপুর এলাকার মো. মন্টু মিয়া নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘পানি বাড়ায় আমার মাছের ঘের ভেসে গেছে। লক্ষাধিক টাকার মাছ বের হয়ে গেছে পুকুর থেকে।’আরেক মৎস্য চাষি মো. সোহেল মিয়া বলেন, ‘এবারের বন্যায় আমার ৩টি পুকুর ভেসে গেছে। এতে প্রায় ৮ লক্ষাধিক টাকার মাছ বের হয়ে গেছে।’ ভাই ভাই নার্সারির মালিক মো. তারা মিয়া বলেন, ‘যমুনা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় লোকালয়ে বন্যার পানি ঢুকে পরে আমার প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ তলিয়ে গেছে। বন্যার পানি দীর্ঘস্থায়ী হলে গাছের চারাগুলো মরে যাবে।’ এদিকে বানভাসী এলাকার মানুষ অভিযোগ করে বলেন, বন্যায় তারা দূর্বিসহ জীবনযাপন করলেও সরকারি কোন সহায়তা এখন পর্যন্ত পাননি। নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ ফয়েজুল ইসলাম বলেন, ‘যমুনা নদী সংলগ্ন এলাকার পানিবন্দি মানুষদের গতকাল থেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হচ্ছে। বন্যা কবলিতদের সরকারি ভাবে খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। আরও খাদ্য সহায়তা দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। তাছাড়া ভাঙন কবলিত এলাকা রক্ষার্থে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। Share this:FacebookX Related posts: নাগরপুরে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত নাগরপুরে স্টুডেন্টস কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত নাগরপুরে আগুনে পুড়ে গেছে ৫টি দোকান নাগরপুরে ছেলের মৃত্যু দেখে মায়েরও মৃত্যু নাগরপুরে ইউএনও’র তহবিলে ৫০ হাজার টাকা অনুদান নাগরপুরে ধান কাটার আধুনিক মেশিন পেল কৃষকরা নাগরপুরে কর্মহীন অটোরিকশা শ্রমিকদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ নাগরপুরে নতুন করে ডাক্তার সহ ৫ জন করোনায় আক্রান্ত নাগরপুরে আশ্রয়কেন্দ্রে বন্যার্তদের খাদ্য সহায়তা প্রদান নাগরপুরে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় মোবাইল কোর্ট ও মাস্ক বিতরণ নাগরপুরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ পদ্মা সেতু দৃশ্যমান হওয়ায় নাগরপুরে আনন্দ মিছিল-মিষ্টি বিতরণ SHARES Matched Content ঢাকা বিভাগ বিষয়: নাগরপুরেবন্যা পরিস্থিতির অবনতি