ভালুকায় পিরানহা মাছ বিক্রির দায়ে ৩ মাছ ব্যবসায়ীকে অর্থদন্ড

প্রকাশিত: ৮:২৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার : ময়মনসিংহ জেলার ভালুকায় র‌্যাব-১৪, ময়মনসিংহ কর্তৃক মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করে অবৈধভাবে ক্ষতিকর পিরানহা মাছ বিক্রির দায়ে ০৩ জন মাছ ব্যবসায়ীকে অর্থদন্ড ও ০৩ জন মাছ উৎপাদনকারী ফার্মের মালিক এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন র‌্যাব-১৪।
ময়মনসিংহ র‌্যাব-১৪ কর্তৃক প্রেরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার ও মিডিয়া অফিসার জোনাঈদ আফ্রাদ জানান, সম্প্রতি সারাদেশের বাজারে দেশি রুপচাঁদার নামে বিক্রয় করা হচ্ছে ক্ষতিকারক ও নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ।

সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবাধেই উৎপাদন ও বিপনণ হচ্ছে পিরানহা মাছ। সরকারিভাবে চাষ নিষিদ্ধ এবং দেশীয় মাছের জন্য চরম ক্ষতিকর আফ্রিকার রাক্ষুসে পিরানহা মাছের ডিম উৎপাদন ও চাষ অব্যাহত রয়েছে। অধিক মুনাফার আসায় এক শ্রেণীর মৎস্য ব্যবসায়ী ক্ষতিকর পিরানহা মাছের চাষ ও বাজারজাত করছে। জীববৈচিত্র্যের ক্ষতিকর এই রাক্ষুসে মাছ আমদানি, বাজারজাত ও বিক্রি বাংলাদেশে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু তা সত্ত্বেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এসব মাছ বিক্রি করছে প্রকাশ্যে। বেশি লাভের আশায় তারা ওই মাছকে রূপচাঁদা মাছ বলে বিক্রি করছে। এতে বোকা বনে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ লোকজন।

পিরানহা নামের মাছটি মূলত আমাজন নদীর একটি ভয়ঙ্কর মাছ। মানুষখেকো হিসেবেও অনেকে এই মাছটিকে চেনে। পিরানহা ভয়ংকর এবং দল বেধে চলে। পিরানহা মাছ তাদের খোরদার দাঁত দিয়ে মাত্র কয়েক মিনিটে মানুষের হাড় থেকে মাংস আলাদা করে ফেলে।

অদ্য ১৪ জুলাই ২০২০ ইং তারিখ র‌্যাব-১৪, ময়মনসিংহ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলাধীন একটি মাছের বাজারে ক্ষতিপয় অসাধু মৎস্য ব্যবসায়ী কর্তৃক বেশি লাভের আশায় রূপচাঁদা মাছ বলে বাজারে নিষিদ্ধ পিরানহা মাছ বিক্রি করছে।

উক্ত সংবাদের সত্যতা যাচাই ও উক্ত মাছ উৎপাদন ও বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে র‌্যাব-১৪, ময়মনসিংহ এর একটি আভিযানিক দল সিনিয়র এএসপি জোনাঈদ আফ্রাদ এবং এএসপি তাসলিম হুসাইন এর নেতৃত্বে এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব রোমেন শর্মা ও ভালুকা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জনাব মোঃ তারেক রহমান এর উপস্থিতিতে সঙ্গীয় ফোর্সসহ ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলাধীন মাছের বাজার এলাকায় ০৬.০০ ঘটিকা হতে ০৯.০০ ঘটিকা পর্যন্ত মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করে অবৈধভাবে পিরানহা মাছ বিক্রি করার অপরাধে মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন, ১৯৫০ এর ৩ (৫) ধারা মোতাবেক দোষী সাব্যস্ত করে আসামী ১। মোঃ মামুন রানা, পিতা- আব্দুল মালেক, সাং- রাংচাপড়া, থানা- ভালুকা, জেলা- ময়মনসিংহকে ৫,০০০/- টাকা অর্থদন্ড, ২। শ্রী রবেন চন্দ্র বর্মন, পিতা- উপেন্দ্র চন্দ্র বর্মন, সাং- ধামশুর, থানা- ভালুকা, জেলা- ময়মনসিংহকে ৩,০০০/- টাকা অর্থদন্ড, ৩। রুকন উদ্দিন, পিতা- নুরুল ইসলাম, সাং- আশকা, থানা- ভালুকা, জেলা- ময়মনসিংহকে ৩,০০০/- টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয় এবং তাদের হেফাজত হতে সর্বমোট ২,০০০ (দুই হাজার) কেজি পিরানহা মাছ জব্দ করা হয়। জব্দকৃত পিরানহা মাছ ভালুকা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার মাধ্যমে স্থানীয় এতিমখানায় বিতরণ করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও অনুসন্ধানে জানা যায় যে, তারা বেশি লাভের আশায় ওই মাছকে রূপচাঁদা মাছ বলে বিক্রি করছে। এছাড়াও পিরানহা মাছ উৎপাদনকারী ফার্মের এর মালিক ৪। মোঃ সবুজ মন্ডল, ৫। মোঃ আব্দুল সামাদ মন্ডল ও ৬। মনির মন্ডল পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে ভালুকা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কর্তৃক বাদী হয়ে ভালুকা থানায় মামলা দায়ের এর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

উপরোক্ত ঘটনা সংক্রান্তে গ্রেফতারকৃত আসামীদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়েছে এবং পলাতক ক্ষতিকর পিরানহা মাছ উৎপাদনকারী ফার্মের মালিকদের বিরুদ্ধে মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন, ১৯৫০ এর ৫ (১) ও মৎস্য সংরক্ষণ বিধিমালা-১৯৮৫ এর বিধি (১৬) মোতাবেক ভালুকা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কর্তৃক মামলা দায়ের এর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।