ফুলগাজী-পরশুরামে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি

প্রকাশিত: ৭:৪১ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরামে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। মঙ্গলবার ফেনীর মুহুরী ও কহুয়া নদীর পানি পরশুরাম পয়েন্টে বিপদসীমার ১৫৮ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সোমবার পর্যন্ত বাঁধের ৯টি স্থানে ভাঙ্গণ ও ২০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত রয়েছে।

কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হঠাৎ করে গত রোববার বিকেলে ফেনীর মুহুরী ও কহুয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় ৯টি স্থানে ভেঙ্গে দুই উপজেলার ২০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়।

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, উপজেলার সদর ইউনিয়নের কিসমত ঘনিয়ামোড়ায় একটি ও উত্তর দৌলতপুর এলাকায় ৩টি স্থানে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙ্গে শাহাপাড়া, বৈরাগপুর, উত্তর দৌলতপুর, মধ্যম দৌলতপুর ও দক্ষিণ দৌলতপুর গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

অপরদিকে পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার জানান, উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের মুহুরী নদীর দক্ষিণ শালধরে একটি, দুর্গাপুরে একটি ও কহুয়া নদীর বক্সমাহম্মুূদ ইউনিয়নের কিসমত টেটশ্বরে একটি স্থানে ভাঙ্গণের সৃষ্টি হয়। এতে চিথলিয়া গ্রাম, দুর্গাপুর, রতনপুর, রামপুর, দক্ষিণ শালধর, মালিপাথর, পাগলীরকুল, উত্তর ধনীকুন্ডা, মধ্যম ধনীকুন্ডা, রাজষপুর উত্তর শালধর, নোয়াপুরসহ ১২টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

পানির তোড়ে ভাঙ্গণ কবলিত এসব এলাকার অধিকাংশ মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। পানির তোড়ে ভাঙ্গণ কবলিত গ্রামসমূহের কয়েকটি বসতঘর সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকা, ফসলি জমি, আমনের বীজতলা, পুকুরে মাছ ভেসে গেছে। অনেক স্থানে গ্রামীণ সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়কের ফুলগাজী থেকে পরশুরাম উপজেলার যোগাযোগ দুই দিন বন্ধ ছিল। তবে আজ মঙ্গলবার থেকে সড়ক যোগাযোগ পুনরায় চালু হয়েছে।

এদিকে, ফেনী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান, ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল আলিম, নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, পরশুরাম উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন মজুমদার, নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন আক্তার, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিনসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ ভাঙ্গণের স্থান পরিদর্শন করেছেন।

বন্যা কবলিত এলাকায় বন্যার্তদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ফুলগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, বন্যায় উপজেলার ২৯ হেক্টর আমনের বীজতলা তলিয়ে গেছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, প্রতি বছর ভাঙ্গণ স্থান নামমাত্র মেরামত হলেও বাঁধের কোন স্থায়ী সমাধান হয়না। তাদের দাবি, নদী শাসনের মাধ্যমে সংস্কার করা হলেই নদী ভাঙ্গণ রোধ সম্ভব হবে।