সিরাজগঞ্জে যমুনার পানি ফের বিপদসীমার ওপরে

প্রকাশিত: ৬:৪৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢল ও টানা বৃষ্টিতে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সোমবার সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম রফিকুল ইসলাম জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় কাজিপুর পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ৩১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার (১৫ দশমিক ২৫ মিটার) ২৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অপরদিকে, সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার (১৩ দশমিক ৩৫ মিটার) ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জে শুক্রবার রাত থেকে শুরু করে রোববারও দিনব্যাপী থেমে থেমে মুষলধারে বৃষ্টি হয়। টানা ৯ দিন কমতে থাকার পর যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ সদর ও কাজিপুর পয়েন্টে শুক্রবার থেকে আবারও বাড়তে শুরু করে।

যেভাবে পানি বাড়ছে এর ফলে বড় বন্যার আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ইতোমধ্যে বন্যার্তদের মধ্যে সরকারি ত্রাণ বিতরণ করা শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ।

রফিকুল ইসলাম আরও জানান, আগামী ৭২ ঘন্টা পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এর আগে জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে যমুনা নদীতে পানি বাড়তে শুরু করে। জুনের শেষে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার ও কাজিপুর পয়েন্টে ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। ০২ জুলাই থেকে টানা ০৯ দিন পানি কমার পর ১০ জুলাই থেকে ফের বাড়তে শুরু করেছে।

এদিকে, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বড়াল, ফুলজোড়, হুরাসাগর, ইছামতি, গোহালা ও গুমানী নদীসহ জেলার আভ্যন্তরীণ সকল নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর তীরবর্তী নতুন নতুন নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। জেলার কাজিপুর, সদর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার ৩৩টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

জেলা প্রশাসক জানান, যমুনায় আবারো পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং জেলায় বড় বন্যার আশংকা থেকে বন্যা মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্ততি গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত উপজেলাগুলোতে ১২৫ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৩ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আরও ১ হাজার মেট্রিক টন চাল, শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্য বাবদ ৩০ লাখ এবং জিআর নগদ টাকা হিসেবে আরও ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে জেলায় ১৭৯টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং ১৩টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। জেলা সদরে এবং প্রত্যেক উপজেলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে সেখান থেকে প্রতি মুহুর্তে বন্যার খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।