গজারিয়া-মতলব সেতুতে স্বপ্ন বুনছে দুই পারের মানুষ

প্রকাশিত: ১:১৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : ভৌগোলিক কারণে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাঁদপুরের মতলব উপজেলা কয়েক লক্ষ মানুষকে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া হয়ে যাতায়াত করতে হয়। মাঝে প্রায় দেড় কিলোমিটার প্রস্থের মেঘনা নদী থাকায় এতদিন উপজেলা দুটিতে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করা যায়নি।

তবে সম্প্রতি সেখানে একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতেই স্বপ্ন বুনছে দুই পারের মানুষ।

জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)’র অধীনে মেঘনা নদীর গজারিয়া অংশের কালিপুরা ঘাট থেকে মতলব পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার অংশে নির্মিত হবে এই সেতু। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে শুরু হয়েছে মাটি পরীক্ষার কাজ। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে দ্রুততম সময়ের মধ্যেই শুরু হতে পারে সেতুটির নির্মাণ কাজ।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীর বিভিন্ন অংশে মাটি পরীক্ষার কাজ করছে গ্রাউন্ড ইনস্ট্রোমেন্টেশন এবং ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড (জিআইই) নামে একটি কনসালটেন্ট ফার্ম।

প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত একজন প্রকৌশলী জানান, গত ২০ জুন থেকে তারা মাটি পরীক্ষার কাজ শুরু করেছেন। যা আগামী ২/১ দিনের মধ্যে শেষ হবে।

ট্রলার চালক পাচু মিয়া, ছামেদ প্রধান ও তৌহিদ হোসেন জানান, সেতু নির্মাণ হলে তাদের ট্রলারে কে উঠবে? তারপরও তারা খুশি। এলাকাবাসী খুশির কথা চিন্তা করে প্রয়োজন পরলে পেশা বদল করিতেও রাজি তারা।

এ পথে নিয়মিত চলাচলকারী শাহিনা বেগম ও দেলোয়ার বেপারী জানান, শীত মৌসুমে যখন কুয়াশার তীব্রতা বেশি থাকে তখন এই নৌ-রুটে নিয়মিত ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এছাড়াও ঝড়ের সময় বা সন্ধ্যার পর ট্রলার পাওয়া যায় না। সেতুটি নির্মাণ হলে তাদের অনেক উপকার হবে। রাজধানী শহর ঢাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সহজতর হলে পণ্য পরিবহন আমদানি ও রপ্তানী বাণিজ্যে ব্যাপক উন্নতি সাধিত হবে।

গজারিয়া উপজেলার এলজিআরডি প্রকৌশলী আরজুরুল হক আরজু জানান, দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুটির নির্মাণ কাজ করবে এলজিআরডি। নদীর বেশির ভাগ অংশ গজারিয়ার উপজেলার সীমানায় ও বাকি অংশ চাঁদপুরের মতলব উপজেলার সীমানাধীন হওয়ায় সীমানা নিয়ে কিছুটা জটিলতা আছে। সম্পূর্ণ কাজটি কয়েক ধাপে বিভক্ত করে এলজিআরডির মুন্সিগঞ্জ ও এলজিআরডির চাঁদপুর যৌথভাবে সেতু নির্মাণের কাজটি করবে।

এ বিষয়ে এলজিআরডির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সেতুর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর বর্তমানে সয়েল টেষ্ট কাজ চলমান। তবে বৃহদাকারে সেতু নির্মাণের জন্য ব্যয়ও হয় অনেক। সয়েল টেষ্টের পর ডিজাইন করলে সম্ভাব্য জানা যাবে। তবে নদীর স্রোত থাকায় নদী শাসন, অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণসহ বেশ কিছু কাজকে গুরুত্ব দিতে হচ্ছে। যার ফলে সেতুর ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। সামগ্রিক সকল বিষয়ে বিবেচনা করে সেতু নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করছি। অচিরেই এ ব্যাপারে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে।