উলিপুরে তথ্যে গরমিলের কারণে ৮ হাজার ৭৫৭ হতদরিদ্র পরিবার টাকা পায়নি

প্রকাশিত: ১০:১৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ৯, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : কুড়িগ্রামের উলিপুরে হতদরিদ্র পরিবারের ৮হাজার ৭৫৭ জন মানুষের কাছে এখন পর্যন্ত ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নগদ সহায়তার অর্থ পৌঁছায়নি।

জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম-তারিখ, সিম রেজিষ্ট্রেশনসহ বিভিন্ন তথ্যের গরমিল থাকায় এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন তারা। জানা গেছে, সারা দেশের ন্যায় কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ১ পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নে করোনা ভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া ১৭ হাজার ১০৬ হত-দরিদ্র পরিবারের মাঝে মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নগদ অর্থ সহায়তার জন্য তালিকাভূক্ত করেন স্থানীয় জন-প্রতিনিধিরা।

তালিকাভূক্ত উপকারভোগিদের অভিযোগ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের খাম-খেয়ালীপনার কারণে এ সমস্যায় পড়ে তারা অর্থ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। এছাড়াও সংশোধিত তালিকায় নাম নেই, এমন অনেক তালিকাভূক্ত উপকারভোগীও মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে দেয়া ২ হাজার ৫০০ টাকা এখনও পাননি।

করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া হত-দরিদ্র পরিবারের মাঝে ঈদুল ফিতরের আগে তাদের স্ব-স্ব মোবাইলের মাধ্যমে টাকা পৌঁছানোর কথা থাকলেও এখনও অনেকে তাদের এ টাকা পাননি। ফলে এসব জনগোষ্ঠির মাঝে চরম অসন্তোষ লক্ষ্য করা গেছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মুজিববর্ষে সারাদেশে ৫০ লাখ পরিবারের মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর নগদ অর্থ সহায়তার প্রদান কর্মসূচির উপকারভোগির তথ্য সংশোধনের জন্য সংশোধনী তালিকা এসেছে। উলিপুর পৌরসভার তালিকাভূক্ত ২ হাজার ১৬ জনের মধ্যে৭ শত ১৯, হাতিয়া ইউনিয়নের তালিকাভূক্ত ১ হাজার ২৪৯ জনের মধ্যে ৩শত ৪৬জন, বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের ১ হাজার৪২৯ জনের মধ্যে ৭শত ১১, সাহেবের আলগা ইউনিয়নের ৮শত৮১ জনের মধ্যে ৪শত ৪১, বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের ৭শত৬৫ জনের মধ্যে ৩শত ২৭, গুনাইগাছ ইউনিয়নের ১ হাজার ২১৯ জনের মধ্যে ৯শত৯, তবকপুর ইউনিয়নের ১ হাজার ৫২২ জনের মধ্যে ৪ শত ১১, ধরনীবাড়ি ইউনিয়নের ১ হাজার ২০৭ জনের মধ্যে ৭শত ৯৬, দলদলিয়া ইউনিয়নের ৯শত৯৫ জনের মধ্যে ৬শত ২১, থেতরাই ইউনিয়নের ১ হাজার৩০ জনের মধ্যে ৭শত ১৯, ধামশ্রেনী ইউনিয়নের ৯ শত ৪৪ জনের মধ্যে ৫শত ৪২, দূর্গাপুর ইউনিয়নের ১ হাজার ৪৭৮ জনের মধ্যে ৯শত ৪৮,পান্ডুল ইউনিয়নের ১ হাজার ৬ জনের মধ্যে ৬শত ৫ ও বজরা ইউনিয়নের তালিকাভূক্ত ১ হাজার ৩৬৫ জনের মধ্যে ৬ শত ৬২ জনের নামের তথ্যে বিভিন্ন গরমিল থাকায় তাদের সংশোধিত নতুন তথ্য প্রেরণের জন্য নির্দেশনা আসে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানা গেছে, জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মতারিখ, সিম রেজিষ্ট্রেশনসহ বিভিন্ন তথ্যের গরমিল থাকায় এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন এসব উপকারভোগি। এ পরিস্থিতিতে উপকারভোগিদের তথ্য নতুন ভাবে যাচাই-বাছাই করে দ্রুত সংশ্লিষ্ট জন-প্রতিনিধিরা তথ্য প্রেরণের কাজ করছেন।

মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে এখনও টাকা পাননি এমন অনেকেই জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্মতারিখ, সিম রেজিষ্ট্রেশনসহ অন্যান্য তথ্য ঠিক থাকলেও তাদের মোবাইলে এখনও টাকা আসেনি। এমনকি সংশোধিত তালিকায়ও তাদের নাম নেই। এ পরিস্থিতিতে অনেকটাই শংকিত তালিকাভূক্ত এসব উপকারভোগিরা।

হাতিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন বলেন,সংশোধিত তালিকার ভূলত্রুটি সংশোধন করে তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। তালিকা ভুক্ত কেউ টাকা না পেলে তারা আগামীতে ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমেও টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। তবে তালিকাভুক্ত কোন উপকারীভোগী বঞ্চিত হবেন না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল কাদের বলেন, তালিকা ভূক্ত যেসব উপকারভোগির তথ্যে ভুল আছে,তা সংশোধনের কাজ চলমান রয়েছে। কোন উপকারভোগি যাতে অর্থ বঞ্চিত না হন, সে বিষয়ে পরবর্তি নির্দেশনা মতো কাজ করা হবে।