রাজশাহীতে কাঁচা সড়কে দুর্ভোগে ৩০ গ্রামের মানুষ

প্রকাশিত: ৭:৩৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ৮, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শুরুতেই কয়েকদিনের বৃষ্টিতে কাদাপানিতে একাকার হয়ে চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে প্রানপুর প্রকাশনগর গাল্লা দৈবপুর হয়ে কয়েলহাট থেকে বানিয়াল দিয়ে বনকেশরের মোড়, অপরদিকে কুষ্ণপুর কচুয়া দিয়ে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার মোড় হয়ে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ কাঁচা সড়কগুলো।

ফলে সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে পাঁচন্দর ও বাধাইড় ইউনিয়নের হাজারো মানুষ। এসড়গুলোর কারণে আজো এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না। জরুরি ভিত্তিতে সড়কগুলো পাকাকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ভুক্তভোগীরা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

দীর্ঘদিন ধরে সড়কগুলোর বেহাল দশার কারণে প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষকে দৈনন্দিন চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পাকা সড়ক না থাকায় প্রতি বছর বর্ষাকাল এলে দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। ভোটের সময় জনপ্রতিনিধিরা এ এলাকার দুঃখ দুর্দশা লাঘবে সড়ক নির্মাণে প্রতিশ্রুতি দিলেও কখনোই সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়নি। দীর্ঘ দিন ধরে এলাকাবাসী রাস্তার জন্য বিভিন্ন মহলের কাছে আবেদন করলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

সরজমিন দেখা যায়, গাল্লা, বৈদপুর, কয়েলহাট, বানিয়াল, বোনকেশর, চকপাড়া, জিৎপুর কচুয়া, মোহনপুর গ্রামের মানুষের থানা সদরে যাতায়াতের এ সড়কগুলোর বিভিন্ন অংশের মাটি ক্ষয়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দের।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, এসব এলাকার বসবাসকারী মানুষ তাদের প্রয়োজনের কারণে অন্যত্রে যেতে পারেনা। আর দীর্ঘদিন ধরে কোনো সংস্কার কাজ না হওয়ায় চলাচলের উপযোগিতা হারানোসহ সড়কের বিভিন্ন অংশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বর্ষা হলে রাস্তাগুলো কাদা-পানিতে একাকার হয়ে যায়। সপ্তাহের এক দিন সোমবার একটি হাট বসে মু-ুমালায়। দূর-দূরন্ত থেকে কৃষিপণ্য ও মালামাল মাথায় করে এলাকাবাসীকে মু-ুমালা হাটে যেতে হয় পণ্য বিক্রি করতে হয়।

গাল্লা গ্রামের আবু সুফিয়ান ও সাদিকুল ইসলাম জানান, উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন মধ্যে গাল্লা গ্রাম একেবারেই অবহেলিত। জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন সময়ে জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি পাকাকরণের কথা বললেও তা এখনো কার্যকর হয়নি। রাস্তাঘাট না থাকায় এ এলাকায় উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি।

ভোট এলে নেতারা রাস্তা করে দেয়ার স্বপ্ন দেখান কিন্তু ভোট চলে গেলে তারা আর মনে রাখেন না। এ এলাকায় কোনো মাইক্রোবাস, ট্রাক, নছিমন-করিমন, আটোরিকশা, আটো ভ্যান, পায়ে চালিত ভ্যান চলাচল করতে পারে না। রাস্তা পাকা না হওয়ার ধান ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনতে আসেন না। ফলে তাদের ধান কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে তারা ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন। এ এলাকার সন্তান সম্ভাবা মা, মুমূর্ষু রোগিদের হাসপাতালে নিতে হলে দুর্ভোগের শেষ থাকে না বলে জানান তারা।

উপজেলার কচুয়া আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ ফুলমোহাম্মাদ বলেন, কৃষ্ণপুর থেকে কচুয়া গ্রামের এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন সাইকেল ও বই কাঁধে নিয়ে কলেজে যেতে হয় শিক্ষার্থীদের । বর্ষা মৌসুমে কষ্টের কোনো শেষ থাকে না। যদি সরকার এই কৃষ্ণপুর থেকে মোহনপুর মোড় পর্যন্ত পাকা রাস্তা নির্মাণ করত তাহলে এই দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেত এলাকাবাসী।

বাধাইড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আতাউর রহমান জানান, গাল্লা গ্রামের রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং মানুষের জনস্বার্থে রাস্তাটি পাকা করা উচিত। পাঁচন্দন ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মতিন জানান, বর্ষায় কারনে কাঁচা রাস্থায় মানুষের চলাচল করতে কষ্ট হচ্ছে। এ কারণে কচুয়া গ্রামের কাঁচা রাস্তাটি পাকা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

স্থানীয় সরকার (এলজিইডি) তানোর উপজেলার প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, জনবল সঙ্কটের কারণে উপজেলার বিভিন্ন রাস্তা কাঁচা রয়েছে। আগামী অর্থ বছরে এই রাস্তাগুলি পাকা করার ব্যাপারে কিছু করা যায় কিনা? সে বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে।