ভোটাধিকার হরণের প্রধান অস্ত্র ইভিএম

প্রকাশিত: ৭:২৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৯

স্টাফ রিপোর্টার : ‘ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ভোটাধিকার হরণের প্রধান অস্ত্র’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। তিনি বলেন, ‘ইভিএম বাতিল করে নির্বাচন কমিশনকে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’

রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

নির্বাচন কমিশনের পরিস্থিতি তুলে ধরে রিজভী বলেন, ‘গত এক দশকে নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠানটিকে নির্বাচনী সন্ত্রাসের সিলমোহরে পরিণত করা হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানটিকে পরিণত করা হয়েছে একটি পাপেট, অথর্ব এবং দুর্নীতিবাজ প্রতিষ্ঠানে। প্রতিষ্ঠানটি এখন আর জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার জন্য নয় বরং এটি ক্ষমতাসীনদের নির্বাচনী হিংসা ও ভোটলুটের বৈধতা দানের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা ভোটাধিকার হরণের জন্য শুধুমাত্র দিনের আলোই নয়, রাতের অন্ধকারকেও বেছে নিয়েছেন। জনগণের ভোটাধিকার হরণের জন্য নির্বাচন কমিশন আরেকটি প্রধান অস্ত্র নিয়ে দহরম মহরম শুরু করেছে, সেটি হলো ইভিএম। কারণ এই যন্ত্রের মাধ্যমে দ্রুতই ফলাফল পাল্টে দেয়া সম্ভব।’

রিজভী বলেন, ‘শুধু বিএনপিই নয়, দেশের প্রায় সব দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংগঠন- সবাই বলেছে-ইভিএম হচ্ছে ভোট কারচুপির অন্যতম হাতিয়ার। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কানে এ কথা ঢুকছে না।’

‘ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হবে ইভিএম মেশিনে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্য উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেবের বক্তব্যের পরপরই প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরো উচ্চস্বরে বলে ওঠলেন, ইভিএম ব্যবহার করেই তিনি নির্বাচন করবেন। ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে কারসাজি করে সরকারের পক্ষে রায় নেয়ার জন্য জনগণের ইচ্ছের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।’

রিজভী আরও বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময়ে বারবার বলেছি, ইভিএম ২৮ বছরের পুরনো একটি প্রযুক্তি। প্রযুক্তিবিদদের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, ইভিএম একটি অস্বচ্ছ ভোটগ্রহণ পদ্ধতি, যা গণতন্ত্র চর্চায় সহায়ক নয়। যেসব দেশে বিভিন্ন সময় পরীক্ষামূলকভাবে ইভিএম ব্যবহার করে আংশিক ভোটগ্রহণ হয়েছিল পরবর্তীতে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে একমাত্র ভারত ছাড়া নেদারল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাষ্ট্রসহ সবদেশে ইভিএম ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, ইভিএম সহজেই টেম্পার করা যায়। তাই ইভিএম ব্যবহার করে নির্বাচনে বিশ্বাসযোগ্য ফলাফল পাওয়া অসম্ভব।’

‘এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে আসন্ন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠ হবে কি না তা নিয়ে ভোটাররা শঙ্কিত। কারণ এখনও পর্যন্ত তাদের কোনো ঐকান্তিক উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। তারা শুধু আপ্তবাক্যের জাবর কেটে যাচ্ছেন। জনগণের ঘাড়ের ওপর দৈত্যের মতো চেপে বসা এ সরকার সুষ্ঠু নির্বাচনকে যাদুকরের মতো অদৃশ্য করে দিয়েছে।’

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে ৩৫ হাজার ইভিএম