খুলনা সিটির ১৪ ও ১৭ ওয়ার্ড এবং রূপসার আইচগাতি লকডাউন

প্রকাশিত: ৪:৪২ অপরাহ্ণ, জুন ২২, ২০২০

আতিয়ার রহমান,খুলনা ; করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ১৭ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ড এবং রূপসা উপজেলার আইচগাতিকে রেড জোন হিসেবে লকডাউন করা হবে।

২৫ জুনের পর থেকে দোকানপাট-শপিংমল রবি, সোম ও মঙ্গলবার খোলা থাকবে। নমুনা জমা দেওয়ার পর রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত ঐ ব্যক্তিকে স্বেচ্ছায় বাড়ি বা বাসায় অবরুদ্ধ হয়ে থাকতে হবে। খুলনা জেনারেল হাসপাতালের চতুর্থ তলায় ৪২টি বেডে কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসায় দ্রুত নতুন একটি হাসপাতাল তৈরি করা হবে।

খুলনা জেলা করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ কমিটির সভায় এসকল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে তাঁর সম্মেলনকক্ষে গতকাল সোমবার দুপুরে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিভাগীয় কমিশনার ড. মুঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, খুলনা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

২৫ জুন মধ্যরাত থেকে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ১৭ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ড এবং রূপসার আইচগাতি ইউনিয়নে অধিকমাত্রায় করোনাভাইসে আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ায় এই তিনটি এলাকা রেড জোনের আওতায় নিয়ে লকডাউন করা হবে। ১৬ জুলাই পর্যন্ত এই লকডাউন কার্যকর থাকবে। লকডাউন এলাকার সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং কাঁচাবাজারসমূহ লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে। লকডাউন শুরুর আগে ঐ সকল এলাকায় মাইকিং করে জনসাধারণকে জানানো হবে।

করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা প্রদানের পর ঐ ব্যক্তিকে রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত স্বেচ্ছায় নিজ বাড়িতে অথবা বাসায় অবরুদ্ধ হয়ে থাকতে হবে। ল্যাবের ধারণ ক্ষমতার তুলনায় নমুনা সংগ্রহ বেশি হওয়ায় রির্পোট প্রদানে বিলম্ব ঘটছে।বর্তমানে খুলনা জেলায় শপিংমলসহ দোকান-পাট ২৫ জুন পর্যন্ত থাকবে। ২৬ জুন থেকে সপ্তাহে রবি, সোম ও মঙ্গলবার তিনদিন বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত শপিংমল ও দোকানপাট খোলা রাখা যাবে।

কোভিড-১৯ রোগী ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে খুলনা জেনারেল হাসপাতালের চুর্তথ তলায় ৪২টি বেড নিয়ে নতুন কোভিড-১৯ চিকিৎসাকেন্দ্র অতি দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করা হবে। ডায়বেটিক হাসপাতালে (বর্তমানে কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র) একটি হাই ফ্লো অক্সিজেন ন্যাজাল ক্যানোল ক্রয় করা হবে। কোভিড-১৯ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সুস্থবোধ করলে এবং পরপর তিনদিন জ¦র না থাকলে তাঁকে পরীক্ষা ছাড়াই হাসপাতাল থেকে অবমুক্ত (রিলিজ) করা হবে। করোনভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর বাড়িতে লাল পতাকা উড়িয়ে চিহ্নিত করা হবে। জনসাধারণকে মাস্ক ব্যবহারে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে।

সভায় সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ঈদের সময়ে জনসাধারণের যথেচ্ছ চলাফেরায় খুলনায় করোনভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা যদি আজকের সভার সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করি এবং সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলি তাহলে সকলের প্রচেষ্টায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে আমরা মুক্ত হতে পারবো।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রকিবুল ইসালম, পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুন্সী মোঃ রেজা সেকেন্দার, খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ, খুলনার সিভিল সার্জন ডা: সুজাত আহমেদ, খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য অফিসার ম. জাভেদ ইকবাল, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আসাদুজ্জামান খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জিয়াউর রহমান, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক মোঃ আব্দুল আলিম, খুলনা প্রেসক্লাবে সভাপতি এসএম নজরুল ইসলামসহ অন্যান্য সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা।