টানা বর্ষণে নারায়ণগঞ্জ শহর পানিতে তলিয়ে, জনজীবন বিপর্যস্ত

প্রকাশিত: ৭:১৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৮, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জ শহর ও শহরতলীর প্রায় এলাকা টানা বর্যণে পানিতে ডুবে গেছে। জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কোথাও হাটু পানি আবার কোথাও কোমর সমান পানি। অনেকের বসতঘরে পানি উঠেছে। ঘরের আসবাব পত্র তলিয়ে আছে পানির নিচে। বিশেষ করে ডিএনডি এলাকায় ঘরে ঘরে বৃষ্টির পানি ঢুকেছে। ফলে মানুষ পড়েছে নিদারুণ কস্টে। বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ।
জানা গেছে, বুধবার মধ্যরাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত একটানা বর্ষনের কারনে নারায়ণগঞ্জ শহরের প্রধান প্রধান সড়ক পানির নিচে তলিয়ে যায়। এছাড়া অলিগলিতে হাটু সমান পানি। মহল্লার অলিগলিতে মানুষ পানি বেয়ে চলাচল করছে।

দেওভোগ এলাকার বাসিন্দা সাদেকুল আলম জানান, কোন বছরই তার বাসায় বর্ষা কালে পানি প্রবেশ করেনি। এবার একদিনের বৃষ্টিতে ঘরে পানি ঢুকেছে। আসবাব পত্র সব ডুবে গেছে। আমাদের কষ্টের কি আর শেষ আছে? তিনি বলেন, মাত্র বর্ষা কাল শুরু। সামনে আমাদের কি দুর্গতি আছে আল্লাহ ভালো জানেন।

চাষাড়ার বাসিন্দা সোলায়মান মিয়া বলেন, সকাল ঘুম থেকে উঠে দোকান থেকে আটা আর তেল আনতে গিয়ে দেখি রাস্তায় হাঁটু পানি। পরে বাসায় জুতা রেখে পানি পেরিয়ে দোকান গিয়েছি। ড্রেন নিষ্কাশন না করার ফলে বৃষ্টি হলেই রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যায়।

ডিএনডির ফতুল্লা দেলপাড়া টাওয়ার পাড় এলাকার বাসিন্দা আতিকুর রহমান বিদ্যুৎ জানান, বৃহস্পতিবার সকালে রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে, অনেকের বাসায় পানি ঢুকেছে। পরিবার পরিজন নিয়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে তারা।

তিনি আরো জানান, মাত্র বর্ষাকাল শুরু এখনি একদিনের বৃষ্টিতে পানিবদ্ধ হয়ে পড়ছি আমরা। বর্ষাকালের বাকি সময়টা নিয়ে আমরা শংকিত। এত কোটি টাকা খরচ করে সরকার ডিএনডির জলবদ্ধতা নিরসনে কাজ করছে তার নমুনা এটা প্রশ্ন রাখেন তিনি।

ইসদাইর এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, পানির কথা বলে লাভ কী? একটু বৃষ্টি হলেই ইসদাইর, গাবতলীসহ আশপাশের এলাকার মানুষের দুর্ভোগ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করার মত না। এলাকার মানুষ পানির নিচে বসবাস করছে। রাতের টানা বৃষ্টিতে যেন বন্যা দেখা দিয়েছে। মানুষ পানি পেরিয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছে। আমরা যারা ডিএনডি এলাকার বাসিন্দা তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।

দূর্ভোগের শিকার ফতুল্লার সস্তাপুরবাসি। ফতুল্লা থেকে জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি কোতালের বাগ, ইসদাইর, লালপুর পৌষপুকুর পাড়, দাপা ঈদ্রাকপুরের পাইলট স্কুল এলাকায়।

দিনমজুর ও অটোচালকরা আরো বেশি ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে। তাদের নিম্ন আয়ের কারনে তারা সাধারনত নিম্নাঞ্চলের বস্তির ঘরগুলিতে ভাড়া থাকতে হয়। জলাবদ্ধতার বৈরী আবহাওয়ার কারনে আজ কোন আয় নেই। ডুবে গেছে আবাসস্থল, ভেসে যাচ্ছে ঘরের মালামাল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিএনডি এলাকার মাহমুদপুর, ভুইগড়, দেলপাড়া, আদর্শনগর, রসুলপুর, নয়ামাটি, নুরবাগ, নন্দলালপুর, পিলকুনি, কুতুবআইল, ইসদাইর, গাবতলী, লালপুর, সস্তাপুর, কলেজ রোড, দেওভোগ, পাইকপাড়া, বাবুরাইল, হাজীগঞ্জ, পাঠানতলী, গোদনাইল, জালকুড়ি, মিজমিজি ও হিরাঝিল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এছাড়া ফতুল্লার মাসদাইর, মুসলিমনগর, হরিহরপাড়া, ধর্মগঞ্জ, কাশিপুরসহ প্রায় শতাধিক এলাকা পানির নিচে রয়েছে।