বাউফলে হাট বাজারের কাঙ্খিত রাজস্ব আদায় নিয়ে শঙ্কা

প্রকাশিত: ৮:৫৬ অপরাহ্ণ, জুন ১৭, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : পটুয়াখালীর বাউফলে ৩৮টি হাট বাজারের রাজস্ব আদায় করা নিয়ে আশংকা তৈরি হয়েছে। করোনার সংক্রমন ঠেকাতে উপজেলা প্রশাসন হাট বাজার বন্ধের নির্দেশ দেয়ায় প্রত্যেক ইজারাদার কৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন।

সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে নিয়মিত হাটবাজার বসালেও ইজারামুল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে তারা উদাসীন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইজারাদারদের ডেকে চাপ সৃষ্টি করলেও তারা করোনার দোহাই দিয়ে ইজারার টাকা পরিশোধ করতে গড়িমসি করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাউফল উপজেলার ছোট বড় ৩৮টি হাট ইজারা দিয়ে প্রতি বছর প্রায় আড়াই কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়। চলতি বছর (বাংলা ১৪২৭ সন) মোট ২৮টি হাট বাজার ১ কোটি ১৫ লাখ টাকায় ইজারা দেয়া হয়। নানা কারনে বাকি ১০টি হাট ইজারা দেয়া হয়নি। দরপত্র দাখিলের সময় মোট ইজারা মূল্যের শতকরা ৩০ ভাগ অর্থ পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা করতে হয়।

বাকি ইজারা মূল্য পহেলা বৈশাখের আগে পরিশোধ করার নিয়ম। কিন্তু নতুন বছরের ২ মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত মেহেন্দীপুর ও রাবাইরহাট ছাড়া বাকী অর্থ পরিশোধ করেননি কোন ইজারাদার। মেহেন্দীপুর হাট ২,৮১,৫০০ টাকা এবং রাবাইরহাট ৫০০০ টাকায় ইজারা দেয়া হয়েছে। ওই দুটি হাটের ইজারাদার পহেলা বৈশাখের আগে ইজারামূল্য পরিশোধ করেছেন।

এদিকে উপজেলার প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র কালাইয়া হাট থেকে প্রতি বছর রাজস্ব আদায় হয় দেড় কোটি টাকা। বিগত ৩ বছর ধরে কালাইয়া হাট ইজারা দেয়া হচ্ছে না। কালাইয়া হাটের টোল কাগজে কলমে খাস আদায় দেখানো হলেও বাস্তবে নিয়ন্ত্রন করছেন আওয়ামীলীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা। তারা নিয়মিত টোল আদায় করে কিছু অর্থ ভূমি অফিসে জমা দিচ্ছেন।

কালাইয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা তার পক্ষে প্রতি সপ্তাহে টোলের অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দিচ্ছেন। গত ২ সপ্তাহে গড়ে সোয়া লাখ টাকা কালাইয়া হাটের টোল বাবদ জমা দেয়া হয়েছে। সপ্তাহে গড়ে সোয়া লাখ টাকা টোল আদায় হলে বছর শেষে রাজস্ব আয়ের অংক দাড়াবে মাত্র ৬০ লাখ টাকা। এখানে প্রায় ১ কোটি টাকা রাজস্ব হারানোর শংকা রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, যৌক্তিক কোন কারন ছাড়াই গত ৩ বছর ধরে কালাইয়া হাট ইজারা দেয়া হচ্ছে না। খাস আদায়ের নামে টোলের টাকা লুটপাট করার উদ্দেশ্যে স্থাণীয় আওয়ামীলীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা হাটটি ইজারা প্রদানে বাঁধা হয়ে আছেন।

আদালতে মামলা চলমান থাকায় কালাইয়া হাট ইজারা দেয়া যাচ্ছে না দাবী করে ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা শাহজাদ হোসাইন বলেন, করোনার কারনে দেড় মাস টোল আদায় বন্ধ ছিল। এখন আবার হাট শুরু হয়েছে। গত ২ সপ্তাহে মোট ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা আদায় করেছি। তবে হাটের মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।

এদিকে একই কারনে বগা হাটের ইজারা দেয়া যাচ্ছে না। বগা হাটও সুকৌশলে সরকারি দলের এক প্রভাবশালী নেতা নিয়ন্ত্রণ করছেন। বগা হাট ইজারা দিয়ে গড়ে ১৫ লাখ টাকা রাজস্ব আয়ের রেকর্ড থাকলেও বিগত কয়েক বছর ধরে খাস আদায়ের নামে টোলের টাকা লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে করোনার কারন দেখিয়ে এই হাট থেকেও নামমাত্র টোল আদায় দেখানো হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বাউফলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, অফিসিয়ালি হাট বাজার বন্ধ থাকলেও কোন নিয়ম মানা হচ্ছে না। এখন নিয়মিত হাট বাজার বসানো হচ্ছে। ইজারাদারদের টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দেয়া হলে তারা করোনার কারন দেখিয়ে গড়িমসি করছেন।