সরকারের নির্দেশনা অমান্য করেই চলছে এ যানবাহন: ভাড়া বেড়েছে আড়াইগুণ

প্রকাশিত: ৯:৫৪ অপরাহ্ণ, জুন ১৫, ২০২০

মো:আতিয়ার রহমান,খুলনা অফিস : খুলনার ডাকবাংলা থেকে দৌলতপুর পর্যন্ত বেবী ট্যাক্সী (সিএনজি, মাহিন্দ্রা) ভাড়া ছিল ১৮ টাকা। ওই ভাড়া করোনা ভায়রাস দোহায় দিয়ে এক লাফে বেড়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। সরকারি হিসেব মতে, ভাড়া আসে যাত্রী প্রতি ২৮.৮০ টাকা। ডাকবাংলা থেকে ফুলতলা পর্যন্ত বেবী ট্যাক্সী ভাড়া ছিল ৫০ টাকা। সেখানে এক লাফে ভাড়া বেড়ে দ্াড়িয়েছে ১২০ টাকা থেকে ১২৫ টাকা। ভাড়া বেড়েছে যাত্রী প্রতি আড়াই গুণ।

সরকারি হিসেব মতে, ভাড়া আসে যাত্রী প্রতি ৮০ টাকা। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সামাজিক দুরত্ব বজায়ে রাখতে যাত্রী বহনের কথা বলা হয়েছে। একই সাথে ৬০ ভাগ ভাড়া বেশী রাখারও নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু এ নির্দেশনা মানছে না বেবীট্যাক্সী চালকরা। তারা লোকসানের অজুহাতে ভাড়া আড়াই গুণ করে বেশী রাখছে। এতে করে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারন মানুষ।

অবিলম্বে সরকারের নির্দেশনা মেনে যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করার দাবি করেছেন সাধারণ যাত্রীরা।ঘড়ির কাটায় তখন দুপুর ২টা বাজে। দৌলতপুর বেবীট্যাক্সী স্ট্যান্ড থেকে খুলনায় আসার জন্য সিরিয়াল দিয়ে দাড়িয়ে আছে ২০ থেকে ২৫টি সিএনজি ও মাহেন্দ্রা। হাক ডাক ছেড়ে বলছে, খুলনা যাবেন খুলনা যাবেন, যাত্রীরা ভাড়া জিজ্ঞাসা করতেই বলছে ৪৫ টাকা। পরে দরকাসাকসিতে বলছে ৪০ টাকা। কারণ হিসেবে চালকরা বলছেন, এখন দু’জন করে যাত্রী বহন করতে হয়। তিনজন যাত্রী ওঠালে পুলিশ পথে নামিয়ে দিচ্ছে। মাহিন্দ্রা চালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন ভাড়া বেশি না হলে খাব কি, একই কথা বলেন অন্যান্য চালকরা।

খুলনা বেবী ট্যাক্সী শ্রমিক ইউনিয়নের সহ সম্পাদক আবু সালেহ কাজল বলেন, আগে ১৮ টাকা ভাড়া ছিল, এখন সেখানে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা রাখা হচ্ছে। কারণ আগে একটি গাড়িতে পাঁচজন যাত্রী বহন করতো। এখন সেখানে দু’জন যাত্রী বহন করতে হচ্ছে। প্রতি দিন দুই থেকে তিন ট্রিপ হয়। এতে করে একজন চালকের সংসার চালানো খরচ ওঠে না।

মোশারেফ হোসেন নামের আরেকজন চালক বলেন, লোকসান দিয়ে অনেকটা বাধ্য হয়ে গাড়ি চালাচ্ছি। কারণ ১০দিন গাড়ি বসে থাকলে ইঞ্জিন ও ব্যাটারি নস্ট হয়ে যায়। এত করে অনেক টাকা ক্ষতি হয়ে যায়। এ ক্ষতি থেকে বাঁচতে লোকসান দিয়েও গাড়ি চালাচ্ছি বলে তিনি জানান।
মাহিন্দ্রা চালক মনির হোসেন জানান, ডাকবাংলা থেকে দৌলতপুর পর্যন্ত একটি মাহিন্দ্রায় তেল খরচ হয় ৫০ টাকা। কিন্তু দু’জন যাত্রী নিলে ভাড়া বাবদ আসছে ৮০ টাকা। এভাবে প্রতি দিন দু’ থেকে তিন ট্রিপ দেয়া যায়।

এভাবে প্রতি দিন একজন চালকের তেল খরচ বাদে আয় হয় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। এত স্বল্প টাকায় সংসার চালানো কস্ট কর হয়ে পড়েছে। দু’জনের বেশী যাত্রী ওঠালে নগরীর জোড়াগেট, বয়রা, নতুন রাস্তার মোড়ে পুলিশ গাড়ি থামিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী নামিয়ে দিচ্ছে। তারা ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও দু’জনের বেশী যাত্রীবহন করতে পারছেন না। এতে করে তারা প্রতিদিন নাম মাত্র আয় করেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। এত অল্প আয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে কস্টে দিনাতিপাত করছেন বলে তিনি দাবি করেন।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসাইন জানান, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করা হবে।