গুইমারায় চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোউৎসব দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম প্রকাশিত: ২:৩০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৯ আব্দুর রহিম,জেলা প্রতিনিধি খাগড়াছড়ি : পার্বত্য খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় চলছে বালু খেকোদের মহা তান্ডব। নিয়ম নিতীর কোন তোয়াক্কা না করে উপজেলার সকল ছোট বড় খাল থেকে নির্বিচারে বালু উত্তোলন করছে তারা। শুধু খাল নয় স্কেভেটর দিয়ে কেটে নিচ্ছে খালের পাড়ও। রেহায় পাচ্ছেনা ছোট ছোট পাহাড়ি ছড়া গুলোও। বিধি দ্বারা নির্ধারিত স্থান,পদ্ধতিতে,উম্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ইজারা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইজারাগ্রহন না করে বিপণনের উদ্দেশ্যে কোনো উন্মুক্ত স্থান,ছড়া,সেতু,কালভার্ট,ড্যাম,ব্যারাজ,বাঁধ, সড়ক,মহাসড়ক,বন,ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকা থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হলেও সরকারি আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, গুইমারা উপজেলার তৈর্কমাপাড়া, চাইন্দামুনি,চিংগুলিপাড়া,বাইল্যাছড়ি ও সিন্দুকছড়ি’সহ প্রায় ১৬টি স্থানে পাহাড়ীছড়া ও খাল থেকে ইজারাবিহীন প্রতিনিয়িত পরিকল্পনাহীন যত্রতত্র হাজার-হাজার ঘনফুট বালু উত্তোলন করা হচ্ছে অবৈধভাবে। আবার স্ক্যাবেটর দিয়ে কেউ কেউ কাঁটছে পাহাড়ী ছড়ার পাড়,কেউবা আবার খাল থেকে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ড্রেজার মেশিন দিয়ে বিরামহীন ভাবে করছে বালু উত্তোলন। এ যেন লুটপাটের মহাস্বর্গ। এর ফলে পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও এসবের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।বালু দস্যু চক্রটি নির্বিচারে মাত্রাহীন বেপরোয়া ভাবে বালু উত্তোলনের কারনে,সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমান রাজস্ব,অন্যদিকে বর্ষার ভরা মৌসুমে খালের ভাঙ্গন আগ্রাসী রুপ ধারণ করে বিপদজনক হয়ে উঠে খাল পাড়ের মানুষের জীবন। এত কিছু ঘটলেও কিছুতেই ঘুম ভাংছেনা প্রশাসনের। জাদুর কাঠির পরশে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন তারা। গুইমারা উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের মধ্যে হাফছড়ি ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পাহাড় কাঁটার দৃশ্য চোখে পড়েছে। মোট ১৮টি স্ক্যাবেটর দিয়ে কেটে ৩২টি ড্রাম ট্রাক ও ২০টি ট্রলিতে পরিবহন করছে এসব বালু ও মাটি।একদিকে শত শত একর ফসলি জমি নষ্ট করে উর্বর মাটি বিক্রি করা হলেও এসব নিয়ে মাথা ব্যাথা নেই কৃষি কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট করোরই।অন্যদিকে বালু উত্তোলন করে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারন কৃষকরা।যার কারনে বর্ষা মৌসুমে ধ্বসে যাচ্ছে তাদের ফসলী জমি।অনেক গুলো ছোট খাল ও ছড়ার অস্তিত্ব ইতিমধ্যে বিলিন হয়ে গেছে।পরিকল্পনাহীন বালু উত্তোলনে সৃষ্ট বায়ুদূষণে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। পানিদূষণসহ বদলে যাচ্ছে,পাহাড়ীছড়া ও খালের গঠনপ্রক্রিয়াও। সচেতন মহল বলছেন,শুধুমাত্র কিছু ব্যক্তি বিশেষ ও গোষ্টির অর্থ লালসার কারেন ধ্বংশ হচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকায় ব্যায়ে নির্মিত ব্রিজ-কালভার্ট সহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প।আর জনস্বার্থে এখনিই এদের প্রতিরোধ করা না গেলে,ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে কঠিন ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে । হাফছড়ি এলাকার ক্যাজরি মারমা জানান,অবৈধ বালু খেকোরা ধরাকে সরা মনে করে চলছে। এ ব্যবসায় বাঁধা বলে কোন শব্দ নেই,যা আছে তা হচ্ছে আয় আর আয়। এতে করে অনেকেই রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে বটগাছও বনে গেছেন। স্থানীয় কৃষক ন্যাপা র্মামা ও অংগ্যজাই র্মামা জানান,বালু খেকোদের এমন আগ্রাসী কান্ডে তাদের ফসলী জমি ধ্বংশের মুখে।তারা থেকে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।গড়ে উঠেছে প্রভাবশালীদের নিয়ে বালু ব্যবসার একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট।যে কারনে গনমাধ্যমকর্মীরাও সংবাদ প্রকাশে নিবর দর্শকের ভুমিকা পালন করছেন।এছাড়ও বালু বাহী ট্রাকের অবাধে যাতায়াতের কারনে ধূলাবালি জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিক্ষার্থী’সহ সাধারন জনতা। স্থানীয় রাপ্রু মারমা জানান,তার পরিবার বালু ব্যবসায়ীর নিকট এক লক্ষ আশি হাজার টাকায় তার বসত ঘর সংলগ্ন খালের পাড় বিক্রি করেছেন।তবে তার জায়গা থেকে বালু তোলার মুখিক অনুমতি দিয়ে বিপদে পড়েছেন বলে জানান তিনি। একাধিক বালু ব্যবসায়ীরা জানান,তাদের কাছে বালু উত্তোলনের বা খালের পাড় কেঁটে বিক্রির বৈধ কোন কাগজ পত্র নেই।তবে অবৈধ জেনেও এ ব্যবসা কিভাবে করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে জানান,বিভিন্ন উপায়ে চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের এ ব্যবসা। তৈর্কমা এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অংক্যচিং চৌধুরী জানান,বালু উত্তোলন ও খালের পাড় কেটে বিক্রি করায় কৃষকদের ফসলী জমি ক্ষতিগ্রস্তের মুখে।বিষয়টি তিনি অবগত হয়ে উপজেলার সাপ্তাহিক মিটিংয়ে উর্ধতন কতৃপক্ষকে জানিয়েছেন। হাফছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান চাইথোয়াই চৌধুরী জানান,বালু উত্তোলন ও খাল পাঁড় কেঁটে বিক্রির বিষয়গুলো তিনি শুনেছেন। তবে ব্যস্ততার কারনে স্বরজমিনে গিয়ে দেখা সম্ভব হয়নি তার। পরিবেশ অধিদপ্তরের পার্বত্য চট্রগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক ফেরদাউস আনোয়ার জানান,গুইমারায় অবৈধ বালু উত্তোলন ও খালের পাঁড় কেঁটে বিক্রির বিষয়টি তিনি অবগত হয়েছেন। লোকবলের সংকটের কারনে খাগড়াছড়িতে পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যক্রম জেলাপ্রশাসকের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।বিষয়টি তিনি বিধিসম্মত ভাবে দেখবেন। এ বিষয়ে গুইমারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তুষার আহমেদ বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি সরজমিনে গিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন,২০১০এর ১৫।(১)এই আইনের ধারা ৪ বলা হয়েছে ,অনুমতি ব্যতিরেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করিলে সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী ব্যক্তিবর্গ(এক্সিকিউটিভ বডি)বা তাহাদের সহায়তাকারী কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ অনূর্ধ্ব ২(দুই) বৎসর কারাদন্ড বা সর্বনিন্ম ৫০(পঞ্চাশ)হাজার টাকা হইতে ১০(দশ)লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হইবেন। হালুয়াঘাটে রাতের আধারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শীতার্তদের কম্বল বিতরণ করলেন ইউএনও রেজাউল করিম Share this:FacebookX Related posts: গুইমারায় থামছেইনা অবৈধ বালু উত্তোলন গুইমারায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে মারমা উন্নয়ন সংসদ(মাউস)’র ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন মুজিববর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে গুইমারায় শহীদ মিনার উদ্বোধন গুইমারায় মোটর সাইকেল চালককে হত্যা: ওসির অপসারন দাবীতে উত্তাল গুইমারা গুইমারায় দূর্বৃত্তের আগুনে নিঃশ্ব হলো হতদরিদ্র পরিবার গুইমারায় হতদরিদ্রদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ গুইমারায় স্ত্রী-সন্তানের সামনেই যুবককে হত্যা করে লাশ নিয়ে গেল দূর্বৃত্তরা ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মাদক পাচারকারী নিহত কুমিল্লায় অস্ত্র-গুলিসহ ডাকাত দলের ১১ সদস্য গ্রেফতার মধ্যরাতে ফুটপাতে আড্ডারত অবস্থায় পুলিশের পিটুনি মাটিরাঙ্গায় হত-দরিদ্র মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা বিজিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই রোহিঙ্গা নিহত SHARES Matched Content চট্টগ্রাম বিভাগ বিষয়: অবৈধ বালু উত্তোলনগুইমারায়প্রশাসনমহোউৎসব