বগুড়ায় ধান কাটার উৎসব চলছে

প্রকাশিত: ৬:১৩ অপরাহ্ণ, মে ৪, ২০২০

অনলাইন ডেস্ক : বগুড়ায় পাকা বোরো ধান ক্ষেতে চলছে ধান কাটার উৎসব। বগুড়ায় বোরোর বাম্পার ফলনে খুশি কৃষক। কিন্তু ধানের দাম নিয়ে শঙ্কায় তারা। জেলায় রিকশা ও কল-কারখানার কর্মহীন শ্রমিকরা ক্ষেতে ধান কাটকে শুরু করায় শ্রমিক সংকট হবে না এমনটাই মনে করছেন কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা।

জেলার কোন জমিতে ধান কাটার উপযুক্ত হয়েছে, আবার কোন জমির ধান পাকার অপেক্ষায়।

জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে কর্মকর্তারা জানান, জেলার এ পর্যন্ত সাড়ে ৪ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে। আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে ৭০ শতাংশ ধান কাটার উপোযোগী হয়ে উঠবে। জেলা শুরুতে নতুন বোরোর ধানের (মিনিকেট) দাম ছিল ৯০০ টাকা। কিন্তু হঠাৎ করে সেই ধানের দাম ৮০০ টাকায় নেমে এসেছে। এই ধানের দাম যদি আরও কমে আসে তবে কৃষকদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

বগুড়ার গোহাইল ইউনিয়েনের শালিকা গ্রামের কৃষক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, আমার নিজের জমি বলেই হয়তো আমি লোকসানের মুখে পড়বো না। নিজের ১৫ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি। প্রতি বিঘাতে (রোপণ, সেচ ,কাটা,মাড়াই ) খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা। বিঘাতে ২৩ থেকে ২৫ মণ ধান পাওয়ার আশা করছি। হাটে এখন ৮শ টাকা মণ দরে ধান (মিনিকেট) বেচাকেনা চলছে।

তিনি আরও বলেন, আমার নিজের জমি বলেই এ যাত্রায় অল্প কিছু লাভ থাকবে। কিন্তু যারা জমি লিজ (স্থানীয় ভাষায় পত্তন) নিয়ে ধান চাষ করেছে তাদের লোকসানের মুখে পড়তে হতে পারে। লীজিরা এক বিঘা জমি (আমন ও বোরো মিলিয়ে) লিজ নিয়েছেন ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকায়। জমির ভাড়া বাদ দিয়ে এক মৌসুমে জমি ক্রয়ে খরচ হচ্ছে ১০ হাজার টাকা। হাটে বর্তমান মূল্যে ধান বেচাকেনা হলে যারা লীজ নিয়েছে তাদর লোকসান গুনতে হবে।

মোস্তাফিজার রহমান বলেন, লীজিদের উৎপাদন খরচ ১০ হাজার এবং জমির ভাড়া এক ফসলে ৮ হাজার টাকা। অর্থাৎ বিঘাতে খরচ পড়ছে ১৮ হাজার টাকা। বর্তমান ধানের বাজার মূল্যে ধান বিক্রি হলে লীজি কৃষকের লোকসান ছাড়া লাভ হবেনা। সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে পারলে কৃষকরা এ যাত্রায় লোকসানের হাত থেকে বেঁচে যাবে।

খাদ্য বিভাগ এবার প্রতি মণ ধান ১ হাজার ৪০ টাকায় সংগ্রহ করছে। নন্দীগ্রাম, শাজাহনপুর ও শেরপুর উপজেলায় সাধারণত সরু চাল যেমন- মিনিকেট, কাটারীভোগ ধানসহ বিভিন্ন জাতের সরু ধান উৎপাদন হয়ে থাকে। এবার মিনিকেট ধান বিঘাতে ২২ থেকে ২৫ মণ উৎপাদন হয়েছে। কাটারী ধান বিঘাতে ২২ থেকে ২৩ মণ পেয়ে থাকে কৃষক।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাইফুল ইসলাম জানান, সরু বা মোটা কৃষক যে ধান আনবে তা যদি ১৪ শতাংশ আদ্রতা সম্পন্ন হয় তবে তারা তা নিতে বাধ্য। মণে ৯শ টাকা থেকে ধানের দাম নীচের দিকে নেমে আসায় আতংকিত হচ্ছে কৃষক।

এ বছর জেলায় ১ লাখ ৮৮ হাজার ৬১৫ হেক্টর জমিতে ৭ লাখ ৭৪ হাজার ৬৮০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবে বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচারক আবুল কাসেম আজাদ। তবে কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান হবে বলে জানান কৃষি কর্মকর্তারা।