করোনা আতংকে খুমেক হাসপাতাল রোগী শুন্য !

প্রকাশিত: ৭:৫৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৯, ২০২০

আতিয়ার রহমান,খুলনা : করোনা ভাইরাসের প্রভাবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রোগী শুন্য হয়ে পড়ছে। এ হাসপাতালের সার্জারী ওয়ার্ডে একজনের মৃত্যুর পর করোনা সন্দেহ হওয়ার কারণে আতঙ্কে রোগীরা হাসপাতাল ত্যাগ করেন। আর সম্পূর্ণ হাসপাতালটিকে করোনা ইউনিট করার ঘোষণা দিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও এখানে কোন নতুন রোগী ভর্তি করছেন না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ৫শ’ শয্যার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আগে প্রায় দেড় হাজার ভর্তি রোগীর অবস্থান থাকত স্বাভাবিকভাবে। সেখানে ২৫ মার্চ ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২৮০ জন। আর ২৬ মার্চ করোনা সন্দেহে একজন রোগীর মৃত্যুর পর ২৭ মার্চ থেকে পুরো হাসপাতালই রোগী শূন্য হয়ে গেছে। রোগীরা স্বেচ্ছায় হাসপাতাল ছেড়েছেন। এদিকে, খুলনা জেনারেল হাসপাতালেও রোগী ভর্তি কমে গেছে। খুলনার উপজেলাগুলোতেও সাধারণ রোগের চিকিৎসা সেবা গ্রহণের হার ৩০ ভাগে নেমে এসেছে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন রোগী মোস্তফা কামাল পাশা (৭০)। তার স্ত্রী পারুল বেগম বলেন, সোমবার এখানে তার স্বামীকে ভর্তি করানো হয়েছে। স্ট্রোক করার পর তাকে পিরোজপুর থেকে এখানে আনা হয়েছে। তিনদিনেও তার জ্ঞান ফেরেনি। এখানে একজনের মৃত্যুর পর আতঙ্ক দেখা দেয়। এ কারণে তারাও হাসপাতাল ছেড়েছেন।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন এন্ড প্লাষ্টিক সার্জারী ইউনিটের সিনিয়র স্টাফ নার্স রমা রানী দাশ বলেন, করোনার প্রভাবে এখানে রোগী কমতে কমতে ২৫ মার্চ দুপুরে ১০ জন ছিল। ২৬ মার্চ রাতে সকলেই নিজ দায়িত্বে চলে যেতে চায়। তখন তাদেরকে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে দেয়া হয়। ২৭ মার্চ থেকে হাসপাতাল রোগী শুণ্য রয়েছে।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এ টি এম মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, এখানে করোনার প্রভাবে দিনকে দিন ভর্তি রোগী কমে আসতে থাকে। ২৬ মার্চ এক রোগীর মৃত্যুর পর ডাক্তার নার্সসহ ১৬ জনকে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়। এরপর হাসপাতাল রোগী শুন্য হয়ে যায়। আর এ হাসপাতালটিকে করোনা ওয়ার্ড করার পরিকল্পনা নেয়ার কারণে নতুন করে রোগী ভর্তি করা হচ্ছে না।

খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদ বলেন, খুলনার জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে রোগী ভর্তির হার ৩০ ভাগে নেমে এসেছে। এখন করোনার প্রভাবের কারণে অন্যান্য রোগী হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসছেন না। খুলনা জেনারেল হাসপাতালের ২৫০টি বেডের ৭০ ভাগ বেডই এখন খালি থাকছে। উপজেলা পর্যায়ে এখন সকল হাসপাতালই ৫০ বেডের। কিন্তু সেখানেও সিট খালি থাকছে।

তবে, ফোনে পরামর্শ গ্রহণের হার বেড়েছে। জেলা ও উপজেলার জন্য ১০জন চিকিৎসক ও একাধিক টিম এ জন্য সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। তিনি বলেন, খুলনা জেনারেল হাসপাতালটিকে করোনা কোয়ারেন্টিন ইউনিট করার সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণে এখানে নতুন রোগীও ভর্তি করা হচ্ছে না।